বন্ধুরা, বর্তমান সময়ে একটি bank account খোলার সাথে সাথেই আমাদের ATM card দিয়ে দেওয়া হয়।
এই ATM card ব্যবহার করে, আমরা আমাদের bank account এর মধ্যে থাকা টাকা গুলো একটি ATM machine এর মাধ্যমে তুলে নিতে পারি।
তবে এই বিষয়ে আপনারাও অবশই জানেন। তাই না ?
কিন্তু বর্তমানে bank থেকে যেগুলো কার্ড আমাদের দেওয়া হয় সেগুলো কেবল এটিএম কার্ড নয়।
সেগুলো হলো ATM come Debit card.
মানে, এই ধরণের কার্ড গুলো ব্যবহার করে আমরা ATM থেকে টাকা তোলার সাথে সাথে একটি ডেবিট কার্ড এর সুবিধে গুলোর লাভ নিতে পারবো।
অনেকেই এখনো ডেবিট কার্ড কি বা ডেবিট কার্ড কাকে বলে সেটা জানেননা।
আবার অনেকেই রয়েছেন, যারা debit card এবং credit card এর মাঝে থাকা পার্থক্য বুঝতে পারেননা।
এমনিতে, debit card এবং credit card দুটোই কিন্তু আমাদের ব্যাঙ্ক এর দাড়াই আমাদের দিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু মনে রাখবেন, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড এর মানে সম্পূর্ণ আলাদা।
সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা পরিস্থিতি, প্রয়োজন এবং যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে, এই কার্ড গুলো আমাদের দেওয়া হয়।
এই দুই ধরণের কার্ড এর মধ্যে থাকা পার্থক্য বোঝার জন্য,
আপনার প্রথমেই, “debit card কি” এবং “credit card কি” সেই বিষয়ে জেনেনিতে হবে।
ডেবিট কার্ড কি ? (About debit card in Bangla)
ডেবিট কার্ড হলো এমন একটি physical plastic card যেটা আপনার savings bank account এর সাথে link করা থাকে।
এই কার্ড ব্যবহার করলে আপনার savings account এর মধ্যে থাকা টাকার থেকেই প্রত্যেক ধরণের পেমেন্ট গুলোর বিপরীতে টাকা কেটে নেওয়া হবে।
যদি আপনার ডেবিট কার্ড এর সাথে সংযুক্ত savings একাউন্টে টাকা না থাকে, তাহলে সেই কার্ড ব্যবহার হবেনা।
মানে, debit card ব্যবহার করার জন্য আপনার সেভিংস একাউন্টে টাকা থাকতেই হবে।
ATM কার্ড এর মতোই এই debit card এর ক্ষেত্রেও আপনাকে একটি 4 digit এর secret pin code দিয়ে দেওয়া হয়।
এতে, shopping করার সময় যদি আপনি সোজা cash না দিয়ে debit card দিয়ে payment করতে চান,
তাহলে, দোকানদারের swipe machine এর মধ্যে নিজের debit card ঘষিয়ে ৪ অংকের সিক্রেট পিন কোড দিয়ে দিলেই আপনার ব্যাঙ্ক এর সেভিং একাউন্ট থেকেই পেমেন্ট হয়ে যাবে।
আপনার কাছে একটি debit card থাকলে, জাগায় জাগায় cash নিয়ে ঘুরার ঝামেলা আপনার থাকছেনা।
একটি debit card এর মাধ্যমে ATM machine থেকে টাকা তোলাও সম্ভব।
ATM থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে, আপনার debit card এবং তার সাথে থাকা ৪ অংকের সিক্রেট কোড ব্যবহার করতে হবে।
যা আমি আগেই বলেছি, ATM machine ছাড়াও online payment, shopping mall, restaurant, petrol pump ইত্যাদি নানান জায়গা গুলোতে আপনি নিজের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে পারবেন।
তাহলে আশা করছি, ডেবিট কার্ড এর বিষয়ে ভালো করে অবশই বুঝতে পেরেছেন।
ক্রেডিট কার্ড কি ? (what is credit card in bangla)
একটি ক্রেডিড কার্ড এর মাধ্যমে আপনারা সেই প্রত্যেকটি কাজ করতে পারবেন যেগুলো ডেবিট কার্ড এর মাধ্যমে করা যেতে পারে।
কিন্তু একটি ক্রেডিট কার্ড ডেবিট কার্ড এর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
Credit card হলো, যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের দ্বারা জারি করা একটি physical plastic card.
এই কার্ড এর নামের মধ্যেই এর মানে লুকিয়ে রয়েছে।
Credit মানে হলো “বাকি”.
যেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে আপনাকে credit card দেওয়া হবে,
সেই প্রতিষ্ঠান আপনাকে কার্ড দেওয়ার আগেই কার্ডের একটি স্থায়ী ক্রেডিট সীমা (fixed credit limit) ঠিক করে দিবে।
কার্ডের ক্রেডিট সীমা আপনার মাসিক ইনকাম, যোগ্যতা, চাকরি বা ব্যবসা এই বিষয় গুলোর ওপর দেখে ঠিক করা হয়।
এমনিতে, সাধারণ চাকরিজীবী লোকেদের ক্ষেত্রে, ৩০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে ক্রেডিট সীমা রাখা হয়।
আপনি আপনার credit card ব্যবহার করে,
অনলাইন পেমেন্ট, অনলাইন শপিং, বিল পেমেন্ট, অফলাইনে শপিং বা কেনাকাটা ইত্যাদি নানান ক্ষেত্রে পেমেন্ট করতে পারবেন।
Credit card এর বিশেষ লাভ হলো,
“এর মাধ্যমে আমরা অনলাইন ইএমআই (EMI) তে জিনিস কিনে নিতে পারি”.
Credit card সম্পূর্ণ রূপে একটি বাকি খাতা বা লোন (loan) এর মতোই।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোর থেকে আপনাকে দিয়ে দেওয়া টাকা গুলোকে আপনি যেকোনো জায়গায় নিজের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন।
এবং যতোটুকু টাকা আপনি ব্যবহার করবেন, সেই টাকা সময়ে সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে ঘুরিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখবেন, ব্যবহার করা টাকা সময়ে সময়ে ঘুরিয়ে দিতে না পারলে, আপনার credit score খারাপ হবে এবং আপনার ওপর জরিমানা লাগানো হবে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম সম্পূর্ণ ডেবিট কার্ডের মতোই।
এখানেও, আপনাকে ৪ ডিজিটের একটি সিক্রেট কোড নম্বর দেওয়া হয় যেটা কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করার সময় ব্যবহার করতে হবে।
তাহলে আশা করছি, ক্রেডিট কার্ড কাকে বলে বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন।
ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা (eligibility for credit cards)
একটি ডেবিট কার্ড পাওয়ার জন্য বিশেষ কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন নেই।
যখন আপনি একটি ব্যাংকে গিয়ে সাধারণ savings account খুলবেন, তখনি আপনাকে ডেবিট কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে।
কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা।
একটি credit card পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে আলাদা করে কার্ডের জন্য apply করতে হবে।
আর, যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান আপনার নামে credit card জারি করার আগে কিছু বিশেষ বিষয়ে ধ্যান দিয়ে থাকেন।
সোজা ভাবে বললে, এই বিশেষ বিষয় গুলোকেই বলা যেতে পারে “ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা”.
তাহলে একটি ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে ?
- আপনার বয়েস কমেও ২১ বছর বা তার থেকে বেশি হতে হবে।
- নিয়মিত আয়ের উৎস থাকতেই হবে। (Salaried বা self-employed).
- আপনার নিজের নামে একটি সেভিংস একাউন্ট থাকতেই হবে।
- আপনার credit score বা CIBIL score অবশই ভালো থাকতে হবে।
- কোনো ধরণের পুরোনো credit repayments বা loan এর ওপরে defaults থাকলে হবেনা।
এছাড়াও, আলাদা আলাদা দেশের ব্যাঙ্ক গুলোর আলাদা আলাদা নিয়ম বা যোগ্যতা থাকতেই পারে।
আপনি bank এর manager এর সাথে যোগাযোগ করে নিজের দেশে credit card নেওয়ার যোগ্যতা গুলোর বিষয়ে জেনেনিতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাওয়া যায় ?
ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাওয়া যায় বা কিভাবে বানাবো এই প্রশ্নের উত্তর অনেক সোজা।
Credit card বানানোর জন্য, সর্ব প্রথমে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (financial institution) বা ব্যাঙ্ক (bank) এর কাছে যেতে হবে।
তারপর, সেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের credit card বিভাগে গিয়ে কথা বলতে হবে।
যা আমি আগেই বলেছি,
ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা কিছু রয়েছে, যেগুলোর বিষয়ে সেই ক্রেডিট কার্ড বিভাগের কর্মচারীরা দেখবেন।
যেমন,
আপনার source of income কি, আপনি মাসে কত টাকা আয় করছেন, আপনার CIBIL score কত, আগে কোনো লোন নিয়েছিলেন নাকি ইত্যাদি।
এই সমস্ত বিষয়ের ওপর নজর দেওয়ার পর, ক্রেডিট কার্ড বিভাগ থেকে আপনাকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বলে দিবে।
যদি আপনার মধ্যে ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে, তাহলে সাধারণ কিছু ফর্ম ফিলাপ করে আপনি ক্রেডিট কার্ড এর জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
এমনিতে আপনি আপনার bank এর online website এর মাধ্যমেও অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড এপ্লাই করতে পারবেন।
এই ক্ষেত্রে, bank এর কর্মচারীরা আপনার সাথে যোগাযোগ করে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বলে দিবে।
তাহলে আশা করছি, “ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাওয়া যায়” বা “কিভাবে ক্রেডিট কার্ড বানাবো” এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা পেয়ে গেছেন।
Credit card এবং debit card এর মাঝে পার্থক্য কি ?
ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ড এর মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই।
একটি ডেবিট কার্ড দিয়ে যেগুলো জিনিস করা যেতে পারে সেই সব গুলোই একটি ক্রেডিট কার্ড দিয়েও করা সম্ভব।
Online purchase, bill payment, shopping ইত্যাদি প্রত্যেক ক্ষেত্রেই credit card বা debit card দুটোই ব্যবহার করা যেতে পারে।
তাহলে এদের মধ্যে কিসের পার্থক্য রয়েছে ?
যা আমি আগেই বলেছি,
Debit card হলো এমন একটি physical plastic কার্ড, যেটা আপনার ব্যাঙ্ক এর সেভিংস একাউন্ট এর সাথে লিংক করা থাকবে।
আর তাই, এই কার্ড ব্যবহার করলে আপনার সেভিংস একাউন্ট এর থেকে টাকা কাটবে।
এর বিপরীতে,
Credit card হলো এমন একটি physical plastic কার্ড, যেটা কার্ড জারি করা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একটি বিশেষ একাউন্ট এর সাথে লিংক করা থাকে।
এই কার্ড ব্যবহার করলে, আপনার ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট থেকে টাকা কাটা হবেনা।
তবে, যেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান আপনার কার্ড জারি করেছে, তারা আপনার হয়ে টাকা দিয়ে দিবেন।
এবং ভবিষ্যতে, আপনার হয়ে টাকা দিয়ে দেওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সেই টাকা ঘুরিয়ে দিতে হবে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি টাকা ধার নেওয়ার মতোই বলা যেতে পারে।
এটাই হলো ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড এর মাঝে থাকা মূল পার্থক্য।
উদাহরণ স্বরূপে,
যদি আপনি একটি টিভি (TV) কিনেছেন এবং নিজের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করেছেন,
তাহলে, টিভির জন্য পেমেন্ট করা টাকা সোজা আপনার ডেবিট কার্ড এর সাথে লিংক হয়ে থাকা ব্যাঙ্ক এর সেভিংস একাউন্ট থেকে কাটবে।
এর বিপরীতে,
যদি আপনি টিভি কেনার সময় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করেছেন,
তাহলে, সেই টাকা আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে কাটা হবেনা।
আপনাকে ক্রেডিট কার্ড জারি করে দেওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট থেকে সেই টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।
তবে, সেই টাকা কেবল কিছু সময় / দিন এর জন্য ধার হিসেবে দেওয়া হয়।
আজকে আমরা কি শিখলাম,
তো বন্ধুরা, আজকে আমরা শিখলাম “credit card এবং debit card মানে কি” এই বিষয়ে।
এর সাথেই, আমরা এই দুই ধরণের কার্ডের মাঝে থাকা পার্থক্যটিও জেনেনিলাম।
তাছাড়া, ক্রেডিট কার্ড পাওয়া নিয়ম কি এবং ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা নিয়েও আমরা চর্চা করেছি।
আমার সব সময় এটাই চেষ্টা থাকে যে, আমি যাতে আপনাদের সম্পূর্ণ সঠিক এবং কাজের তথ্য প্রদান করতে পারি।
তাই, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের সমস্যা বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট অবশই করবেন।
তাছাড়া, ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড এর বিষয়ে লেখা আজকের আর্টিকেল ভালো লেগে থাকলে, আর্টিকেলটি “share” অবশই করবেন।