Skip to content

ফাইভার একাউন্ট বন্ধ হওয়ার কারণ কি?

বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যন্সারদের মার্কেটপ্লেস হিসেবে অন্যতম জনপ্রিয় একটি সাইট হলো ফাইভার। ফাইভারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ার বা ক্লায়েন্টরা কাজ দিয়ে থাকেন এবং বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে থাকা ফ্রিল্যান্সাররা সেই কাজ সম্পন্ন করে দেন।

অনেকসময় দেখা যায় যে ফাইভার ব্যবহারকারীরা তাদের একাউন্টে এক্সেস করতে পারছেন না। এটি হবার পিছনে প্রধান কারন হলো আপনার একাউন্ট হয়তোবা রেস্ট্রিক্ট কিংবা ডিসেবল হয়ে গেছে। ফাইভার একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট কিংবা ডিসেবল হবার কিছু কমন কারন নিচে উল্লেখ করা হলো।

ফাইভারের ফ্রিল্যান্সাররা যদি ফাইভার টার্মস এবং কন্ডিশনগুলো না মেনে কোনো কাজ করে তখন ফাইভার কর্তৃপক্ষ তাদের একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট কিংবা ডিসেবল করে দেয়। আমাদের আর্টিকেলে আমরা ফাইভার একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট বা ডিসেবল হবার কারন এবং কিভাবে সেই সমস্যা থেকে বাঁচা যাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ফাইভার একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট কিংবা ডিসেবল কেন হয়?

বায়ারের কাছে ৫ স্টার রেটিং চাইলে

বায়ারের কাছে একটি ৫ স্টার রিভিউ চাওয়া ফাইবারে খুবই মারাত্মক একটি অপরাধ। আপনি যদি ঘুষ প্রদান করে এই কাজটি করেন তাহলে সেটি আরো বড় একটি অপরাধের শামিল। এই কাজ করলে আপনার ফাইভার একাউন্ট অনায়েসেই ডিসেবল হয়ে যেতে পারে। ফাইভারের রিভিউ সিস্টেম প্লাটফর্মে নকল গিগ আসা ঠেকাতে অনেক বেশি কঠোর ভূমিকা পালন করে। এ কারনে যেকোনো রিভিউ অবশ্যই সঠিক এবং সৎ ভাবে নিতে হবে। তাই পজিটিভ রিভিউ নেওয়ার জন্য সিস্টেমকে স্ক্যাম করার চেষ্টা করবেন না। এর থেকে কাজ সঠিক ভাবে করে একটি ভালো রেটিং নেওয়ার চেষ্টা করুন।

ফেক রিভিউ গ্রহনের মাধ্যমে

একই ভাবে আপনি যদি ফাইভারে ফেক রিভিউ ক্রয় করেন কিংবা ফেক রিভিউ জোগাড় করেন তাহলে ফাইভার কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্ট ডিসেবল করে দিতে পারে। একটি রিভিউ অবশ্যই আপনার কাজের কোয়ালিটির উপর ভিত্তি করে সঠিক হতে হবে। এছাড়া একটি রিভিউ পাবার জন্য বায়ারের সাথে আপনার ইন্টারাকশন থাকাটা জরুরী। রিভিউ এর মাধ্যমে ফাইবার তার ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তাই আপনি যদি এই নিয়ম অমান্য করেন তাহলে ফাইবার আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সেলার হিসেবে ভেরিফাই না করা

আপনি যখন ফাইভারে সেলার হিসেবে কোনো একাউন্ট তৈরি করবেন ফাইভার আপনাকে ভেরিফাই করার জন্য কিছু ডকুমেন্ট চাইবে। আপনি যদি সেটি না করেন কিংবা আপনি টানা ৩ বার ভুল আইডি দেখান তাহলে ফাইভার আপনার একাউন্ট ডিসেবল করে দিতে পারে।

একাধিক আইডি থাকা

অনেক সময় ফাইভারে সেলাররা তাদের নিজেদের একের অধিক একাউন্ট তৈরি করে। একাধিক আইডি বানিয়ে তারা গিগ লিমিটের সমস্যা দূর করে বাড়তি কাজ পেতে চায়। কিন্তু ফাইভার এর টার্ম এবং কন্ডিশনে একটির বেশি আইডি রাখার ব্যপারে বিধি নিষেধ আছে। এ কারনে আপনি যদি একই আইপি এড্রেস ব্যবহার করে এবং একই ইনফরমেশন দিয়ে একাধিক আইডি তৈরি করেন তাহলে সেটি ফাইভারের নজরে আসলে আপনার সকল একাউন্ট ডিসেবল করে দিবে।

ফাইভার প্লাটফর্ম ব্যতীত অন্য প্লাটফর্মে পেমেন্ট কিংবা যোগাযোগ করলে

ফাইভার প্লাটফর্মেই শুধুমাত্র পেমেন্ট কিংবা যোগাযোগ স্থাপনের ব্যাপারে একটি নিয়ম রয়েছে। এই নিয়ম বায়ার এবং সেলারের নিরাপত্তার খাতিরেই করা হয়েছে। ফাইভার পেমেন্ট আদান প্রদানের ক্ষেত্রে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এছাড়া যেকোনো প্রকার সমস্যার যাতে সৃষ্টি না হয়ে থাকে তাহলে ফাইভার বায়ার এবং সেলারের সকল যোগাযোগ এর নথি সংরক্ষন করে রাখে। অন্য কোনো মাধ্যম ব্যবহার করে যোগাযোগ স্থাপন করা কিংবা কোনো প্রকার লেনদেন করা ফাইভার টার্ম এবং সার্ভিসের নিয়ম বহির্ভুত। এমন কাজ যদি আপনি করে থাকেন তাহলে ফাইভার আপনাকে ওয়ার্নিং পাঠাবে কিংবা কিছু ক্ষেত্রে একাউন্ট ডিসেবল ও করে দিতে পারে।

কপিরাইট ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা

আপনার কাছে কোনো কপিরাইট ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করার পারমিশন না থাকে তাহলে কখনো সেটি ব্যবহার করবেন না। এটি ক্লায়ান্টের কাজের পাশাপাশি আপনার নিজস্ব গিগ আপগ্রেড করার সকল ছবি এবং ভিডিও এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোনো ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করলে অরিজিনাল কন্টেন্ট ব্যবহার করুন। কিংবা যে এসকল কন্টেন্ট এর মালিক তার পারমিশন নিয়ে ব্যবহার করুন। অন্যথায় আপনার একাউন্ট ডিসেবল হবার শঙ্কা থেকে যাবে।

অন্যের গিগ কপি করলে

নিজের গিগ বানানোর সময় আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী সেলাররা কি অফার করতেছে সে বিষয়ে একটা ধারনা নিয়ে নিন। এতে করে আপনি আপনার সুবিধা এবং মার্কেট অনুযায়ী একটি ভালো গিগ বানিয়ে নিতে পারবেন। তবে ভুলেও কখনো আরেক জনের গিগ হুবহু কপি করবেন না। এটি যদি ফাইভারের নজরে আসে তাহলে তারা আপনার একাউন্ট ডিসেবল করে দিতে পারে।

ফেক প্রোফাইল পিকচার দিলে

ফাইভারের টার্মস অফ সার্ভিসের আওতায় আপনাকে আপনার প্রোফাইল পিকচারে আপনার নিজস্ব একটি ছবি ডিসপ্লে করতে হবে। ফাইভার প্লাটফর্মে সকল প্রকার লেনদেন সুরক্ষিত রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থাটি গ্রহন করে থাকে। এছাড়া আপনার প্রোফাইলে একটি প্রোফেশনাল ফটো আপনার একাউন্টের ক্রেডিবিলিটি বৃদ্ধি করে। তাই আপনি যদি একটা ফেক প্রোফাইল পিকচার ব্যবহার করেন তাহলে ফাইভার কর্তৃপক্ষ এর কাছ থেকে ওয়ার্নিং এর পাশাপাশি আপনার একাউন্ট ডিসেবল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আপনি যদি আপনার নিজের ছবি না দিতে চান তাহলে আপনার নিজস্ব বিজনেস লোগো ব্যবহার করতে পারেন। শুধু এ ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন যে সেটি যেন কপিরাইট যুক্ত কিংবা ডাইরেক্ট ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে না দেওয়া হয়।

ডিসেবল হওয়া ফাইভার একাউন্ট রিকভার করার উপায় কি?

যদি আপনার ফাইভার একাউন্ট পারমানেন্টলি ডিসেবল হয়ে যায় তাহলে আপনি ফাইভার সাপোর্টে আপনার একাউন্ট রিকভার করার জন্য আবেদন করতে পারেন। যদিও এক্ষেত্রে খুব ই কম সময়ই ফাইভার আপনার সাথে একমত হয়ে আপনার একাউন্ট চালু করে দেয়। যদি ডিসেবল করার ক্ষেত্রে কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে ফাইভার আগের একাউন্ট ফিরিয়ে দেয়।

আপনি যদি মনে করেন যে ফাইভার আপনার একাউন্ট ভুল করে ডিসেবল করে ফেলছে তাহলে ফাইভার সাপোর্টকে আপনার সমস্যা ভালো করে ব্যাখ্যা করুন। আপনি আপনার সকল সমস্যা কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে এবং প্রয়োজনীয় সকল প্রকার প্রমান দেওয়ার চেষ্টা করুন। তবে আপনি যদি ফাইভারের টার্ক অফ সার্ভিস একাধিক বার লঙ্ঘন করেন তাহলে আপনার একাউন্ট ফিরে পাবার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কম বলা যায়।

ফাইভার একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট কিংবা ডিসেবল হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া খুবই সহজ। আপনি যদি ফাইভারের সকল টার্ম অফ সার্ভিস মেনে চলেন তাহলে আপনার একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট কিংবা ডিসেবল হওয়া থেকে খুব সহজেই বেঁচে যেতে পারবেন। ফাইভার সম্পর্কিত আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারবেন। নিত্য নতুন টেকনোলজি বিষয়ক আর্টিকেল এবং নানা ধরনের টিপস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *