ফ্রিল্যান্সিং কি (What Is Freelancing in Bangla) : এমনিতে, ইন্টারনেট থেকে অনলাইন ইনকাম করার অনেক মাধ্যম বা উপায় আমি আপনাদের আগেই বলেছি। আজ আরেকটি নতুন অনলাইন টাকা আয়ের বিষয় নিয়ে আমি আপনাদের বলবো। আর সেই বিষয়টি হলো, “ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing)“. আজকের আর্টিকেলের দ্বারা আমরা ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড বিভিন্ন বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
আজ, ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা (freelancing business) করে অনেকেই ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন।
আবার, অনেকেই এতো টাকা ইনকাম করে নিচ্ছেন, যে কোনো ফুল টাইম জব বা চাকরি থেকেও এতো আয় করা সম্ভব না।
কিন্তু, ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাধীন ভাবে আয় করার জন্য, আপনার প্রথমে কিছু জরুরি কথা এর বিষয়ে জেনেনিতে হবে।
এই জরুরি বিষয় গুলি হলো –
ফ্রিল্যান্সিং মানে কি ?
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করব ?
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি ?
ফ্রিল্যান্সার হতে কি প্রয়োজন ?
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করবো ?
Freelancing করে কত টাকা আয় করা যাবে ?
আমি কি ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার বানাতে পারবো ?
যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাই, কোন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে হবে ?
নতুনদের জন্য কিছু সেরা ফ্রিল্যান্সিং সাইট কোনগুলি ?
ওপরে আমি দেওয়া বিষয় গুলির ব্যাপারে সম্পূর্ণ জেনে নেয়ার পর, freelancing এর ব্যাপারটা আপনার জন্য স্পষ্ট হয়ে দাঁড়াবে।
এবং, সবটাই জানার পর আপনি এইটা বুঝে যাবেন যে, আসলে freelancing কি বা ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় এবং এর দ্বারা অনলাইন টাকা আয় করাটা আপনার জন্য কতটা সম্ভব হতেপারে।
ফ্রিল্যান্সিং কি ? (What Is Freelancing In Bangla)
সোজা ভাবে বললে, ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি আলাদা মাধ্যম বা উপায়, যার দ্বারা আপনারা অনলাইন কাজ করে টাকা আয় করতে পারবেন।
এমনিতে, একজন চাকরি (job) করা ব্যক্তিকে সকাল ১০ থেকে বিকেল ৬ অব্দি অফিসে গিয়ে এক ধরণের কাজ করতেই হবে।
কিন্তু, freelancing এর মাধ্যমে কাজ করা লোকেরা স্বনির্ভর (self-employed) থাকেন।
তাই, ফ্রিল্যান্সিং এর মানেই হলো স্বাধীন ভাবে কাজ করা বা মুক্তপেশা। এটাও এক ধরণের ব্যবসা বললে আমি ভুল হবোনা।
এই প্রক্রিয়াতে লোকেরা, অনলাইন বিভিন্ন সূত্রের (sources) মাধ্যমে কাজ খুঁজে নিজের ইচ্ছে হিসেবে কাজ করেন।
এক্ষেত্রে, যারা এভাবে স্বাধীন হয়ে freelancing এর কাজ করেন, তাদের “freelancer” বলা হয়।
আজ, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলির মাধ্যমে,
এই ফ্রিল্যান্সাররা (freelancer) নানান ধরণের কাজ, প্রজেক্ট বা সার্ভিস খুঁজে, সেগুলি তারা তাদের ক্লায়েন্টস (clients) দেড় জন্য নির্ধারিত সময়ে পুরো করছেন।
এবং, কাজ বা প্রজেক্ট পুরো করার বিনিময়ে তাদের ক্লায়েন্টরা তাদেরকে টাকা দিচ্ছেন।
অবশ্যই, আপনি যেই প্রজেক্ট বা কাজ করবেন বলে ভাবছেন, তার জন্য কত টাকা নিবেন, সেটা আপনার ক্লায়েন্ট (client) এর সাথে আগেই ঠিক করে নিতে পারবেন।
এবং, সঠিক ভাবে কাজ শেষ হওয়ার পর, আপনার টাকা আপনাকে দিয়ে দেয়া হয়।
এই মাধ্যমে কাজ করার সুবিধে অনেক।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন যে, আপনি কতটা সময় কাজ করতে চান, কতটুকু কাজ করতে চান এবং এই কাজ আপনি পার্ট টাইম (part-time) করবেন না ফুল টাইম (full-time).
তাছাড়া, ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নেয়া কাজ গুলি করার জন্য আপনার কোনো বিশেষ জায়গার প্রয়োজন হবেনা।
কারণ, প্রায় সব ধরণের কাজ করার জন্য আপনার কেবল একটি ল্যাপটপ (laptop) বা কম্পিউটারের (computer) এবং তার সাথে ইন্টারনেট কানেক্শনের প্রয়োজন।
তাই, সবটাই আপনি নিজের ঘরে বোসে বোসেই করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কে আমরা একটি বিসনেস (business) হিসেবেও নিয়ে কাজ করতে পারি।
সোজা ভাবে, ফ্রিল্যান্সিং কি বা ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ?
Freelancing মানে হলো, যেই কাজের বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা (skills) আপনার আছে, তার সাথে রিলেটেড কাজ অন্যদের জন্য করা এবং তার বিনিময়ে টাকা নেওয়া।
তাই, অন্যরা তাদের প্রয়োজন হিসেবে আপনাকে কাজ দিবে, এবং সেই কাজ যদি আপনি জানেন, তাহলে নির্ধারিত সময়ে আপনার তাকে সেই কাজ করে দিতে হবে।
এক্ষেতের, আপনার এমন কিছু দক্ষতা (skills) বা কাজ জানা থাকতে হবে, যেগুলি লোকেরা আপনার দ্বারা করাতে চাইবেন।
তাছাড়া, এমন ভাবেও বলা যেতে পারে যে, freelancing হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আপনি আপনার জানা কাজ বা দক্ষতা ব্যবহার করে অন্যদের জন্য কাজ করেন।
এখানে আপনি বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে পারবেন।
যেমন, writing, designing, digital services, selling services বা যেকোনো অন্য কাজ যেটা আপনি জানেন এবং যেটা লোকেরা আপনাকে দিয়ে করাতে চায়।
এই কাজগুলি, ঘন্টায় (hourly), ডেইলি (daily), সপ্তাহিক (weekly) বা মাস (monthly) হিসেবে করতে পারবেন।
শেষে এটাই আমি বলবো, যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে চান এবং এখান থেকে অনলাইন টাকা আয় করতে চান,
তাহলে সবচে আগেই এটা দেখতে হবে যে, আপনার মধ্যে এমন কি বিশেষ ট্যালেন্ট (talent), কোয়ালিটি, দক্ষতা (skills) রয়েছে যার বিনিময়ে লোকেরা আপনার ওপরে ভরসা করে কাজ দিবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি বা ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে, এবেপারে হয়তো আপনার ভালো ভাবে জ্ঞান হয়ে গেছে।
তাহলে, চলুন এখন আমরা Freelancing এর বিষয়ে আরো অধিক কিছু জেনেনেই।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি ?
বর্তমান এর আধুনিক সময়ে মাসের শেষে একটি মোটা অংকের টাকা আয় করার জন্যে কেবল ৯ থেকে ৫ পর্যন্ত করা চাকরি যথেষ্ট না।
তবে, আজকের সময়ে কেবল চাকরি করেই যে অধিক টাকা উপার্জন করা যাবে এটাও কিন্তু নয়।
কেননা, আজ অনলাইনে প্রচুর Digital work platforms এবং online talent marketplaces গুলো রয়েছে যেগুলোর দ্বারা অনলাইনে কাজ পাওয়াটা প্রচুর সুবিধাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Remote work-এর দ্বারা employers এবং employees দুপক্ষের ক্ষেত্রেই যেকোনো জায়গার থেকে কাজ করার সুবিধা রয়েছে।
আর তাই, বিগত কিছু বছরের মধ্যে ঘরে বসে অনলাইনে স্বাধীন ভাবে কাজ করা freelancer-দের সংখ্যা প্রায় ৪৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজ আগের তুলনায় লোকেরা অনেক বেশি পরিমানে অনলাইন কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছেন।
প্রত্যেকের ঘরে আজ রয়েছে একটি laptop বা computer এবং সাথে internet connection.
তাই, ঘরে বসে নিজের খালি সময়ে কাজ করে extra income করার trend এবং কৌশল বৃদ্ধি পাওয়াটা স্বাভাবিক।
এছাড়া, এখানে আপনার প্রয়োজন হবে কাজের অভিজ্ঞতা এবং কৌশল এর।
তাই, যদি আপনার কাছে একটি বা একাধিক নির্দিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান বা দক্ষতা থেকে থাকে, তাহলে এখানে কাজ পাওয়া অনেক সোজা।
দপ্তরে দপ্তরে গিয়ে কাজের খোঁজ করার সাথে সাথে যদি ফ্রীল্যানসিং করে থাকেন, তাহলে কিঠিক ফ্রীল্যানসিং এর কাজটাই আপনার ফুলটাইম কাজ হয়ে যেতে পারে।
আজ বিশ্বজুড়ে লোকেরা এই ধরণের অনলাইন কাজ গুলোর প্রচুর লাভ নিচ্ছেন।
নিজের ট্যালেন্ট, কাজের অভিজ্ঞতা এবং কৌশল কে কাজে লাগিয়ে সহজেই কাজ পেয়ে যাচ্ছেন এবং টাকা আয় করছেন।
বর্তমান সময়ে প্রচুর লোকেরা ফ্রিল্যান্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং মানে কি, এই বিষয়ে জানার রুচি দেখিয়েছেন।
আর যিহেতু freelancing-এর দ্বারা company এবং brand গুলো অনেক সহজেই বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকা ট্যালেন্ট গুলো খুঁজে পাচ্ছেন, এবং তাদের দিয়ে কম খরচেই চুক্তি হিসেবে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন,
তাই, আমি মনে করি ফ্রিল্যান্সিং এর একটি অনেক উজ্জল ভবিষ্যৎ।
ফ্রিল্যান্সার হতে কি প্রয়োজন ?
আমি এই আর্টিকেলের মধ্যে বারবার বলেছি যে, freelancing হলো এমন একটি কৌশল যেখানে আপনি অন্যের হয়ে চুক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে।
এখন, অন্যান্য ব্যক্তি বা কোম্পানি গুলো আপনাকে দিয়ে কাজ কখন করবেন ? নিজেই একটি ভেবে দেখুন।
অবশই, তারা আপনাকে দিয়ে কেবল তখন কাজ করাবেন যখন আপনার মধ্যে কাজের অভিজ্ঞতা, কৌশল এবং সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকবে।
তাই, ফ্রিল্যান্সার হতে কি প্রয়োজন ? এই প্রশ্নের উত্তর যদি সরাসরি দিতে হয়, তাহলে এর উত্তর হবে, “একটি বা একাধিক কাজের অভিজ্ঞতা এবং কৌশল এর”.
যেমন ধরুন, আপনি video editing-এর কাজ খুব ভালো করেই করতে জানেন।
এক্ষেত্রে, আপনি একজন freelancer হিসেবে video editing রিলেটেড project বা work গুলো করতে পারবেন।
তাই, যদি freelancing করে অনলাইনে ইনকাম করবেন বলে ভাবছেন, তাহলে অবশই আগে নিজের skills এবং knowledge বাড়ানোর ওপরে নজর দিতে হবে।
এছাড়া, ফ্রীল্যানসিং শুরু করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি computer / laptop এবং internet connection এর।
এর সাথেই, কাজ পাওয়ার জন্যে আপনাকে বিভিন্ন freelancing platform গুলোতে account অবশই তৈরি করতে হয়।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করব ? (How to start Freelancing)
আজ, ইন্টারনেট এবং এর ব্যবহার প্রায় সব জায়গায় হচ্ছে বলে আমি ভাবি।
এবং, freelancing এর কাজ করার জন্য, সবচে প্রথম জিনিস যেটা আপনার লাগবে, সেটা হলো “Internet“.
কারণ, নিজের জন্য কাজ খোঁজার থেকে আরম্ভ করে, কাজটি তৈরি করে আপনার ক্লায়েন্ট (client) কে জমা দেয়া,
সবটাই ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে আপনার করতে হবে।
তাছাড়া, এই মাধ্যমে টাকা আয় করার জন্য আপনার প্রচুর নতুন নতুন কাজ বা প্রজেক্টস (projects) এর প্রয়োজন হবে।
তার জন্য আপনাকে, নিজের কাজ বা দক্ষতার (skills) প্রচার বা মার্কেটিং ইন্টারনেটের দ্বারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম (platform) গুলিতে গিয়ে করতে হবে।
যেমন, social media websites, social media groups, freelancing marketplace আরো অনেক।
নিজের দক্ষতা (skills) প্রচার বা মার্কেটিং করলে, লোকেরা জানতে পারবেন যে আপনি কোন কাজের বিশেষজ্ঞ বা এক্সপার্ট এবং কোন কাজ আপনি তাদের জন্য করতে পারবেন।
এতে, ভবিষ্যতে আপনার দক্ষতার (skills) সাথে জড়িত বিভিন্ন project বা কাজ অনলাইন পেয়ে যাওয়ার সুযোগও বেড়ে যাবে।
উদাহরণ স্বরূপে, আমি blogging, SEO এবং Website তৈরি করতে এক্সপার্ট।
এক্ষেত্রে, আমি যদি লোকেদের আমার দক্ষতার (skills) বা নলেজের ব্যাপারে না জানাই,
তাহলে তারা জানবেন কিভাবে যে আমি তাদের জন্য SEO বা website এর সাথে জড়িত কাজ গুলি করে দিতে পারবো। তাই তো….?
তাই, ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যারিয়ার শুরু করার সাথে সাথে, নিজের কাজের নলেজ, অভিজ্ঞতা, দক্ষতার অনলাইন প্রচার বা মার্কেটিং করাটা অনেক জরুরি।
মনে রাখবেন, অনলাইন যেকোনো মাধ্যমে যখন লোকেরা আপনাকে কোনো কাজ বা project দিবেন, তখন তারা আপনার ওপরে অনেক ভরসা করেই সেই কাজটি দিবেন।
তাই, আপনার কাজের ভালো নাম, কাজের অভিজ্ঞতা, ভালো দক্ষতা এগুলি হবে আপনার ব্র্যান্ড (brand) বা নামের পরিচয়।
এবং, আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে, একটি ভালো ব্র্যান্ড বা নাম তৈরি করতে পারলেই, অধিক লোকেরা সহজে আপনার ওপরে ভরসা করে কাজ বা প্রজেক্ট দিবেন।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার আরম্ভ করবো – (step by step)
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার (career) শুরু করার জন্য আপনি নিচে দেয়া স্টেপস গুলি এক এক করে জেনেনিতে পারেন।
১. নিজের লক্ষ্য (Goal) সঠিক ভাবে সেট করুন
সবচে আগেই, আপনার কিছু জিনিস বা লক্ষ্য (goals) সঠিক ভাবে সেট করে নিতে হবে।
যেমন, আপনি এই মাধ্যমে কতটুকু কাজ করতে চান ? কতটা সময় দিতে চান ?
আপনি কি, নিজের চাকরির সাথে সাথে এই কাজ চালিয়ে যাবেন এবং পার্ট-টাইম ইনকাম করবেন না কি ফুল টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন।
এগুলি ব্যাপারে, প্রথমেই ঠিক কোরে নিতে হবে। এতে, পরে আপনি আপনার লক্ষ হিসেবে এগিয়ে যেতে পারবেন।
২. কোন বিষয় (niche) নিয়ে কাজ করবেন ?
দ্বিতীয়তে আপনার, নিজের কাজের টপিক, সাবজেক্ট বা niche কি হবে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।
আপনি, যেকোনো একটি বিষয় নিয়ে কাজ খুঁজতে ও করতে পারবেন।
যেমন, content writing, web designing, coding এর কাজ, Logo designing, SEO services, Video creating, video editing, content marketing বা আরো অনেক কাজ নিয়ে আপনি শুরু করতে পারবেন।
কিন্তু, আপনি যেই niche বা টপিক নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করবেন ভাবছেন, সেই বিষয় বেঁচে নেয়ার আগেই ৪ জিনিস অবশই দেখবেন।
আপনার বেঁচে নেয়া টপিক এমন হতে হবে যার বিষয়ে আপনার পুরো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং জ্ঞান রয়েছে।
যেই কাজ করে এবং যার বিষয়ে নতুন নতুন জিনিস শিখে আপনি ভালো পান সেই কাজ করবেন।
আপনি যেই niche বা টপিক টার্গেট করে ফ্রিল্যান্সিং করবেন ভাবছেন, সেই niche এর মার্কেটে কতটা প্রয়োজন এবং চাহিদা আছে সেটা জানা জরুরি।
এমন বিষয় বা niche নিয়ে কাজ করতে হবে, যেই বিষয়ে আপনার আবেগ (passion) রয়েছে। এতে, কাজ করে আপনি বিরক্ত (bore) হবেননা এবং, বেশি সময় কাজ করতে পারবেন।
তাহলে, freelancing business এর জন্য কোন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন, সেটার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই ওপরে বলা ৪ টি পয়েন্ট অবশই মনে রাখবেন।
৩. কোন কোন freelancing platform বা site এ কাজ করবেন ?
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য আপনি বিভিন্ন অনলাইন freelancing সাইট বা মার্কেটপ্লেস গুলিতে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।
এই ধরণের সাইট গুলিতে বিভিন্ন employer বা clients রা বিভিন্ন ধরণের কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সার দেড় খুজেঁন।
এবং, ফ্রিল্যান্সার রা নতুন নতুন কাজ খোঁজার জন্য এই সাইট গুলিকে ব্যবহার করেন।
মনে রাখবেন, এই সাইট গুলিতে হাজার হাজার লোকেরা বিভিন্ন ধরণের কাজ করানোর জন্য বিশ্বাসী freelancer দেড় খুজেঁন।
এবং, আপনি যদি প্রথমেই নিজের ক্লায়েন্ট (client) এর জন্য সময় মতো ভালো ভাবে কাজ করে দিতে পারেন, তাহলে আপনার ক্যারিয়ারে এ অনেক ভালো প্রভাব ফেলবে।
আমি আগেই বলেছি, এই কাজে পুরোটাই বিশ্বাসের ওপরে নির্ভর।
তাই, আপনি যদি সত্যি কথা বলে সঠিক সময়ে নিজের কাজ ভালো করে পুরো করে client কে জমা দেন, তাহলে এতে সহজে টাকা পেয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আপনার প্রতি অন্যদের ভরসাও বেড়ে যাবে।
এতে, আপনার একটি ভালো পরিচয় তৈরি হয়ে যাবে এবং পরের বারের জন্য আপনাকে কাজ দিতে লোকেরা ভাববেননা।
তাহলে, এখন আমরা নিচে দেখে নেই, ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য আমরা কোন কোন সাইট ব্যবহার করতে পারি।
৫ টি ফ্রিল্যান্সিং সাইট ঘরে বসে কাজ করার জন্য
Fiverr – Fiverr অনেক পুরোনো, বিশ্বাসী এবং অনেক প্রচলিত ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট যেখানে আপনি অনেক ধরণের কাজ করতে পারবেন। প্রত্যেকটি কাজ এখানে ৫ ডলার থেকে শুরু হয়। Graphic designing, Digital marketing, content writing, programming বা video & animation এরকম অনেক ধরণের বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
Upwork – upwork আজকের দিনে অনেক নাম করা একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট, যেখানে ১২ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছে এবং টাকা আয় করছেন। প্রত্যেক বছর এখানে ৩ মিলিয়নের অধিক কাজ পোস্ট করা হয়। এখানে প্রায়, সব ধরণের কাজের জন্য লোকেরা freelancer দেড় খুজেঁন।
Freelancer – এখানে আপনারা প্রায় সব ধরণের কাজের জন্য ক্লায়েন্ট (clients) পেয়ে যাবেন। ১৩৫০ টি আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে (category) এখানে লোকেরা কাজ করছেন। এবং, সেগুলির মধ্যে কিছু হলো – accounting, finance, internet marketing, SEO, PHOTOSHOP, graphic designing, web design, mobile app এবং আরো অনেক অনেক বিষয় নিয়ে এখানে কাজ পেয়ে যাবেন।
Guru – ৩০ লক্ষ লোকেরা guru ওয়েবসাইটের সাথে জড়িত এবং এখন অব্দি ১০ লক্ষ কাজ এখানে করানো হয়েছে। এখানেও আপনারা, প্রায় সব ধরণের বিষয় বা niche নিয়ে কাজ খুঁজতে পারবেন। নিজের একটি প্রোফাইল বানিয়ে, তাতে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং জ্ঞানের ব্যাপারে সবটাই দিয়ে দিন। তারপর, লোকেরা আপনার প্রোফাইল এবং কাজের ব্যাপারে দেখে তাদের প্রয়োজন হিসেবে আপনাকে কাজ দিবে।
তাই, আপনি যদি নিজের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার কথা ভাবছেন, তাহলে ওপরে দেয়া ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলিতে গিয়ে কি করবেন ?
এই ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে, নিজের একটি প্রোফাইল (profile) বা একাউন্ট বানাতে হবে।
আপনি আপনার একাউন্ট বানিয়ে তারপর নিজের প্রোফাইলে, কাজের অভিজ্ঞতা (work experience), আপনার social profiles, পড়াশুনা (education), নিজের প্রোফাইল পিকচার, দক্ষতা (skills), সবটার বিষয়েই লিখতে হবে।
আপনার প্রোফাইলে এটাও লিখুন যে, আপনি আপনার clients বা employer দেড় জন্য কিভাবে এবং কি কি কাজ করতে পারবেন।
তাছাড়া, তারা তাদের কাজের জন্য আপনাকেই কেন বেঁচে নিবেন তার একটি ছোট কারণ লিখুন।
বিভিন্ন, ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলিতে যেগুলিতে আপনারা কাজ করতে চান, প্রোফাইল বানিয়ে আমি ওপরে বলা মতে ডিটেলস গুলি লিখুন।
এতে, বিভিন্ন employers বা clients রা যারা কাজ করাতে চান, তারা আপনার এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞতার ব্যাপারে সহজে জেনেনিতে পারবেন।
এবং, এতে এই সাইট গুলির থেকে কাজ পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়।
এবং, যতটাই বেশি কাজ আপনি পাবেন, ততটাই বেশি টাকা আয় করার সুযোগ আপনার কাছে থাকবে।
আপনাকে দেয়া কাজ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করে আপনি আপনার ক্লায়েন্ট বা employer কে জমা দেয়ার পর, আপনাকে কাজটির জন্য যত টাকা দেয়ার কথা হয়েছিল, সেটা আপনাকে দিয়ে দেয়া হবে।
এবং, এভাবেই ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন নিজের ইন্টারেস্ট (interest), অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার সাথে জড়িত কাজ খুঁজে সেগুলি করতে পারবেন আর ঘরে বসে টাকা আয় করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যাবে ?
ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করার কোনো সীমা নেই।
হে, এটাও এক রকমের ব্যবসা (business), যেখানে আপনার কাছে যত বেশি কাজ আসবে এবং যত বেশি কাজ আপনি করে দিতে পারবেন, ততটাই বেশি আপনার ইনকাম হবে।
PayPal এর একটি survey বা report হিসেবে, ২৩ % ভারতীয় ফ্রিল্যান্সাররা ৬০ লক্ষ টাকা প্রত্যেক বছরে আয় করছে।
এবং, বাকি ২৩% রা ২.৫ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার ভেতরে টাকা আয় করছেন। তাছাড়া, বাকি ৫৪ % ফ্রিল্যান্সাররা ২.৫ লক্ষ থেকেও কম টাকা বছরে আয় করছেন।
তাই, সোজা ভাবে বললে, ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার বানালে লাভ আছে এবং এর থেকে আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন।
কিন্তু, আপনাকে ভরসা করে কতজন কাজ দিচ্ছে এবং কতটা কাজ আপনি সম্পূর্ণ করতে পারছেন, সেটার ওপরে আপনার আয় নির্ভর করবে।
আজ, অনলাইন এবং ইন্টারনেটের দুনিয়াতে সুযোগ অনেক রয়েছে।
লক্ষ লক্ষ লোকেরা, বিভিন্ন ছোট ছোট কাজের জন্য, একজন কর্মচারী (employee) রেখে তাকে মাসে মাসে টাকা দেয়ার থেকে, একজন freelancer কে দিয়ে সেই কাজ অনেক কম টাকায় সহজে করিয়ে নিচ্ছেন।
কোনো বিশেষ কাজে, আপনার যত বেশি অভিজ্ঞতা (experience) থাকবে, ততটাই বেশি টাকা আপনি প্রত্যেক কাজের জন্য চার্জ (charge) করতে পারবেন।
কোন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শিখতে হবে ?
সোজা ভাবে বললে, ফ্রিল্যান্স করার জন্য বা শেখার জন্য কোনো কোর্স (course) করার প্রয়োজন আমাদের হয়না।
হে, কিছু সাধারণ জ্ঞান যেমন, কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো, কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কাজ খুঁজবো এবং প্রথমেই আমাদের কি কি করতে হবে, এগুলির ব্যাপারে জেনে নিতে হবে।
এবং, এগুলির ব্যাপারে সবটাই আমি ওপরে বলেছি।
এখন, ফ্রিল্যান্সিং কোর্স বলেতো বিশেষ কিছুনা নেই, যদিও আপনি freelancing এর কাজ করার জন্য, কিছু বিশেষ কোর্স করতে পারেন, এবং যেগুলি শেখার পর আপনারা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করতে পারবেন। যেমন –
Translating course : আজকাল বিভিন্ন ভাষা জানলে আপনারা translator এর কাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে, ভাষা ট্রান্সলেট করার দক্ষতা থাকাটা আপনার জন্য অনেক কাজ এনেদিতে পারে।
Graphic design : আজকাল, মার্কেটিং, লোগো বানানো এবং প্রায় অনেক কাজেই গ্রাফিক ডিসাইনার দেড় প্রয়োজন হয়। তাই, এই কোর্স আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে।
Website বানানো : এই ব্যাপারে আমি আপনাদের না বললেও চলবে। কারণ, আজকাল ওয়েবসাইট বানানোর কাজ জানাটা কতটা লাভজনক সেটা আমরা সবাই জানি।
Article writing : আপনার যদি লেখার অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা রয়েছে বা আপনি আর্টিকেল লেখার একটি কোর্স করে, ভালো ভাবে এই শিল্প (art) শিখতে পারেন, তাহলে বিভিন্ন ব্লগ (blog) বা কোম্পানির ওয়েবসাইটের জন্য লিখতে পারবেন।
Video editing : বিভিন্ন কোম্পানি বা অনলাইন marketer রা নিজের ব্র্যান্ড এর জন্য ভিডিও এডিটিং কোরান। তাই, এই ব্যাপারে কোর্স করলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেক কাজ পেতে পারবেন।
Coding (PHP/Java/CSS) : আজকাল, web development বা application building এর কাজে বিভিন্ন coding language এর প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে, আপনার যদি কোনো বিশেষ coding language এর জ্ঞান বা দক্ষতা থাকে, তাহলে এর সাথে জড়িত অনেক কাজ পেয়ে যাবেন।
এগুলি ছাড়াও, অনেক আরো কোর্স রয়েছে, যেগুলি করে নিজেকে একজন এক্সপার্ট বানিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর দুনিয়াতে আসতে পারবেন।
FAQ,
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ?
Freelancing হলো অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার একটি আধুনিক কৌশল। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি বা একাধিক কাজ যেমন, video editing, app development, coding, accounts, SEO, website development বা এমন কাজ গুলো শিখতে হয় যেই কাজের চাহিদা অনলাইন বাজারে রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং কি মোবাইলে করা যায় ?
হে, অবশই করা যাবে তবে মোবাইল থেকে freelancing করাটা একেবারেই সুবিধাজনক না। Professional ভাবে freelancing করার জন্যে একটি laptop বা computer অবশই থাকতে হবে।
ফিল্যান্সিং করতে কী কী দরকার ?
একটি বা একাধিক কাজের নলেজ এবং অভিজ্ঞতা, একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট কানেক্শন।
ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায় ?
এক্ষেত্রে যত বেশি কাজ করবেন তত অধিক ইনকাম করতে পারবেন। লোকেরা ফ্রীল্যানসিং করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করছেন।
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ?
বর্তমান সময়ে, SEO, app এবং website development, digital marketing, content writing, translating, graphics designing ইত্যাদি এই ধরণের কাজের চাহিদা প্রচুর।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব ?
Freelancer.com, Fiver.com, Guru.com, এই ধরণের freelancing marketplace গুলোতে গিয়ে email এবং mobile number ব্যবহার করে নিজের একটি ফ্রীল্যাংসিং একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা,
তাহলে বন্ধুরা, ফ্রিল্যান্সিং মানে কি বা ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায়, ফ্রিল্যান্সার হতে কি প্রয়োজন এবং কিভাবে শুরু করবো, এই ব্যাপারে হয়তো আপনারা পুরোটাই ভালো করে বুঝে গেছেন।
এই, মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইন কাজ করাটা অনেক লাভজনক।
কিন্তু, সবচে আগেই, আপনাকে নিজের এমন এক দক্ষতা বা কাজের অভিজ্ঞতার বিষয়ে ভাবতে হবে, যেটাতে আপনি এক্সপার্ট এবং যেই কাজ আপনি সহজে করে দিতে পারবেন।
বাকি, সঠিক ভাবে এগিয়ে গেলে, এখানে আপনিও সফল হয়ে দাঁড়াবেন।