যাদের মূলত ডেক্সটপ কম্পিউটার আছে তারা প্রত্যেকে কম্পিউটার মাউস ব্যবহার করেছে এবং আপনারা কম বেশি প্রায় প্রত্যেকেই computer mouse শব্দটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত।
তো আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব কম্পিউটার মাউস কী ? মাউস কত প্রকার ও কি কি ? মাউসের কয়টি অংশ ? মাউস এর দাম কতো ইত্যাদি বিষয়।
কম্পিউটার মাউসের নাম কিন্তু প্রথমদিকে মাউস ছিলনা। মাউস আবিষ্কার এর প্রথম দিকে এর নাম ছিল The “Bug” । কিন্তু পরবর্তীকালে কম্পিউটার মাউস মূলত ইঁদুরের মতো দেখতে বলে এই যন্ত্রটির নাম করানো হয় মাউস। তো চলুন বেশি কোথাও না বলে মাউস কাকে বলে (mouse kake bole) এই বিষয়টি জেনে নিয়।
মাউস কি ? (what is mouse in Bengali)
মাউস হল এক ধরনের ছোট হার্ডওয়ার ইনপুট ডিভাইস (input device) যা হাত দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এর জন্যে এটিকে hand operated input device ও বলা হয়। এটি কম্পিউটারের কার্সারের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ব্যবহারকারীর কম্পিউটারের বিভিন্ন ফাইল, ফোল্ডার, টেক্সট আইকন সারাতে এবং নির্বাচন করতে ব্যবহার করা হয়।
মাউস এর পূর্ণরূপ কি ?
মাউস এর পূর্ণরূপ বা মাউসের ফুল ফর্ম হল Manually Operated User Selection Equipment
মাউস পয়েন্টার কাকে বলে ?
কম্পিউটার মাউস ব্যবহার করার সময় mouse cursor কি কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যায় । মাউসটি নড়াচড়া করলে কম্পিউটার স্ক্রিনে কিন্তু cursor টি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নড়াচড়া করবে। আর cursor টির কাজ হলো বিভিন্ন জায়গা কে পয়েন্ট করা। এই কার্সার টির অপর নাম হল mouse pointer। আশা করি আপনারা মাউস পয়েন্টার কী এই ব্যাপারটাই বুঝতে পারলেন।
মাউস কে আবিষ্কার করেন ?
ডগলাস এঞ্জেলবার্ট (Douglas Engelbart) 1964 সালে সর্বপ্রথম মাউস আবিষ্কার করেন। তিনি 1964 সালে Stanford Research Institute জন্য কাজ করার সময় এটি আবিষ্কার করেছিলেন।
কিন্তু সে মাউস আজকের দিনের মাউসের মত ছিল না। Douglas Engelbart প্রথম কাঠের মাউস তৈরি করেন এটিতে দুটি চাকা ছিল এর সাহায্যে উপরে নিচে এবং ডান দিকে বাম দিকে সরানো যেত।
মাউস কত প্রকার ও কি কি ?
মাউস যখন প্রথম লঞ্চ হয়েছিল তখন এতে সীমিত ফাংশন ছিল এবং এর আকৃতি ছিল ঠিক ইঁদুরের মত।
কিন্তু বর্তমানে এই ডিজিটাল যুগে অসংখ্য ফিচারযুক্ত একাধিক ডিজাইনের mouse পাওয়া যায়। যদি কেউ প্রশ্ন করে বর্তমানে কোন ধরনের মাউস বেশি ব্যবহার করা হয় এর উত্তর হল USB MOUSE । এবং সবথেকে জনপ্রিয় Computer mouse হলো Logitech কোম্পানির মাউস ।
তো চলুন আরো ভালোভাবে জেনে নেই মাউস কয় প্রকার ও কি কি বা মাউসের কয়টি অংশ এই বিষয়গুলো।
১. Wired Mouse :
এই তারযুক্ত মাউজ করলেই আপনার ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের সঙ্গে ইউএসবি (USB) পোর্টএর মাধ্যমে সরাসরি সংযুক্ত থাকে । Wired Mouse মাউসের মাধ্যমে দ্রুত কাজ করা সম্ভব । সাধারণত গেমাররা এই ধরনের মাউস ব্যবহার করে থাকে দ্রুত কাজ করার জন্য।
২. Wireless Mouse :
wireless mouse এর অর্থ হচ্ছে তারবিহীন মাউস। ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের মাউস ব্যবহার করা হয় তাকে ওয়ারলেস মাউস বলে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (radio frequency) টেকনিকের উপর এ ধরনের মাউস গুলি তৈরি করা হয় । Wireless Mouse এ transmitter এবং receiver এর প্রয়োজন হয়। transmitter টি মাউস এর মধ্যে লাগানো থাকে আর receiver টি কম্পিউটারের মধ্যে লাগাতে হয়।
৩. Mechanical Mouse :
1972 সালে প্রথম মেকানিক্যাল মাউস তৈরি করা হয়। মেকানিক্যাল মাউস এর মাঝে একটি বল থাকত ওই বলটিকে উপরে নিচেেডানে বামে ঘুরিয়ে কাজ করা হতো । mechanical Mouse কে এর জন্য বল মাউস বলা হয়। এ মাউসটি খুব পুরনো এবং এই mouse টি খুব কম ব্যবহার করা হয়েছে। আশাকরি মেকানিক্যাল মাউস কাকে বলে এই বিষয়টি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
৪. Optical Mouse :
এই মাউসের নিচের দিকে ঠিক মাঝখানে বল এর পরিবর্তে এক ধরনের LED (light Emitting Diode) লাইট লাগানো থাকে। মাউসটি এদিক-ওদিক নড়াচড়া করলে লাইটি ও এদিক ওদিক সরে যায় । এর ফলে খুব সহজেই কম্পিউটার কে পয়েন্ট করা যায়। বর্তমানে কিন্তু এধরনের মাউস সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয।
5. Trackball Mouse :
ট্র্যাকবল মাউস হল এক ধরনের পয়েন্টিং ডিভাইস। এ মাউস এর উপরে একটি বড় গোলাকৃতি বল লাগানো থাকে। ওই বলের উপর আঙ্গুল দিয়ে আমরা মাউস কার্সরকে কন্ট্রোল করতে পারি। এ মানুষগুলি একই স্থানেে অবস্থান করে এবং ট্র্যাকবল এর মাধ্যমে মাউস কার্সরকে কন্ট্রোল করা হয়।
মাউস এর কাজ কি ?
আসুন আমরা কম্পিউটার মাউসের কাজ ও ব্যবহার গুলি জেনে নিই।
১. মাউস এর প্রধান কাজ হল কম্পিউটার স্ক্রিনের কার্সর এর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ মাউস কার্সরকে এক দিক থেকে আরেক দিকে নিয়ে যাওয়া।
২. কম্পিউটার মাউস এর সাহায্যে আপনারা একাধিক ফোল্ডার বা ফাইলকে আপনারা নির্বাচন করতে পারবেন বা পয়েন্ট (point) করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি কাউকে অনেকগুলো ফাইল একসঙ্গে পাঠাতে চান তাহলে আপনাকে মাউসের মাধ্যমে সমস্ত ফাইলগুলিকে select করে সেগুলো কে খুব সহজে পাঠাতে পারবেন।
৩. মাউস এর সাহায্যে আপনারা খুব সহজেই scroll up বা down করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি অনেক বড় একটি আর্টিকেল পড়ছেন সেক্ষেত্রে আপনারা মাউসের মিডিলে একটি স্ক্রল বাটন দেখতে পাবেন সেটির সাহায্যে আপনারা নিচের দিকে স্ক্রল করে খুব সহজেই আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়তে পারবেন।
৪ . কম্পিউটারে কোন ফাইল বা ফোল্ডারকে মাউসের লেফট বাটনে double ক্লিক করে আপনারা খুব সহজেই ফাইল বা ফোল্ডার গুলো কে খুলতে পারবেন।
৫. কম্পিউটারের কোন ছবি বা আইকন কে চেপে ধরে রাইট বাটন ক্লিক করে যেকোন জায়গায় আনতে পারবেন এই প্রসেস টি কে বলা হয় Drag and Drop. যেমন ধরুন আপনারা কম্পিউটারের মাধ্যমে whatsapp এ কোন একজনকে কোন ফটো পাঠাবেন এক্ষেত্রে আপনারা সেই ফটোটার উপর বাম বাটন চেপে ধরে টেনে এনে যাকে ফটোটা পাঠাতে চান তার ইনবক্সে ছেড়ে দিয়ে খুব সহজে সেই ফটোটা সেন্ড করতে পারবেন।
FAQ :
1. মাউস কোন ধরনের ডিভাইস ?
উত্তর : কম্পিউটার মাউস হলো ইনপুট ডিভাইস ।
2. মাউসের কয়টি অংশ ?
উত্তর : তিনটি অংশ right button, left button, wheel button ।
3. মাউস কি আউটপুট ডিভাইস ?
উত্তর : না ।
4. তারবিহীন মাউস কে কি বলে ?
উত্তর : wireless mouse ।
আশা করি আপনারা মাউস বলতে কি বুঝায়, মাউসের কয়টি বাটন থাকে, মাউস প্যাড এর দাম এ বিষয়গুলি আপনারা ভালোভাবে জানতে পারলেন।
মাউস কাকে বলে এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদেরকে এটি শেয়ার করতে পারেন। এবং আপনারা কোন ধরনের আর্টিকেল চান আপনার অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।