Skip to content

মোবাইল ফোন রচনা: Mobile Phone Essay in Bengali

মোবাইল ফোন রচনা (Mobile Phone Essay in Bengali), নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি রয়েছে। আশা করছি আমাদের আজকের এই মোবাইল ফোন অনুচ্ছেদ রচনা আপনাদের পছন্দ হবে।

আজকের দিনে মোবাইল ছাড়া মানুষের জীবন প্রায় অলকল্পনীয়। আর, মানুষের স্বভাবই হল দূরের জিনিসকে হাতের তালুর মধ্যে বন্দি করা। তাই, এই ক্ষেত্রে, মোবাইল ফোনের বিশ্বব্যাপী চাহিদাকে অস্বীকার করা যায় না।

বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির মাধ্যমে মুঠোফোনের যে এই মাত্রাহীন প্রসার ঘটেছে, তার ফলেই, মানুষ পেরেছে দেশ, কাল ও সীমানার গন্ডিকে জয় করতে।

মোবাইল ফোন রচনা – (Mobile Phone Essay in Bangla)

বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে আপনার প্রিয়জনের সাথে অচিরেই আলাপ চালিয়ে যেতে পারছেন, শুধুমাএ একটি হাতে-ধরা যন্ত্রের মাধ্যমে। এমনকি, আপনি যে এই আর্টিকেলটি পড়ছেন, তাও হয়তো আপনার ওই মুঠোফোনের স্ক্রিন থেকেই।

সুতরাং, এই আর্টিকেলে আপনি মোবাইল ফোন নিয়ে রচনা বিস্তারিত জানবেন।

তবে তার আগে জেনে নিন, মোবাইল ফোন কি।

মোবাইল ফোন কি ?

মুঠোফোন বা মোবাইল ফোন হল একধরণের ছোট বৈদ্যুতিন যন্ত্র (electronic device)

এই যন্ত্রের সাহায্যে আপনি কোনোরকম তার (wire) ছাড়াই, নির্দিষ্ট নম্বর ডায়েল করে ফোন করতে বা ধরতে পারবেন। এছাড়াও, এই যন্ত্রগুলিতে নির্ভুল সময় দেখতে পারবেন একটি স্ক্রিন বা ডিসপ্লে উনিটের মাধ্যমে।

কোনো ফোন ধরতে বা করতে গেলে কলার নম্বর বা সংযোগের ধরণগুলিও আপনি দেখতে পাবেন। মোবাইল ফোনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, এই যন্ত্রগুলি খুব সহজেই বহনযোগ্য এবং ওজনে হালকা।

বিজ্ঞানের দান- মোবাইল ফোন

এই সময়ে, অত্যাধুনিক স্মার্টফোনের সাহায্যে আপনি অনলাইন শপিং, ব্যবসা, পড়াশুনা করার পাশাপাশি অডিও-ভিডিও কল করতে পারলেও অতীতের মুঠোফোন শুধুমাত্র কথা বলার কাজেই ব্যবহৃত হত।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে, মানুষের দ্রুত জীবন-যাপন এবং পেশার তাগিদে বিজ্ঞানের আশীর্বাদে মুঠোফোন হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

আর এই তথ্যের প্রমাণস্বরূপ ২০২১ সালের গণনা অনুসারে দেখা যাচ্ছে, করোনা মহামারীর প্রকোপ থাকা সত্ত্বেও সারা বিশ্বে স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০.২%।

অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত পৃথিবী জুড়ে ক্রেতারা প্রায় ৩২৮৮ লক্ষ মোবাইল কিনেছেন।

তবে, আজকালকার মোবাইল গুলো গণকযন্ত্রের ছোট সংস্করণ হলেও, প্রথমদিকের মোবাইল ডিভাইসগুলো আদতেই তা ছিল না।

সেগুলো আসলে ছিল অতিকায় বড়। আবিষ্কারের প্রথমদিকে, একটি দূরাভাষ যন্ত্রের ওজন ছিল প্রায় ১ কেজি এবং আকার ছিল প্রায় একটি সুটকেসের তিনভাগের এক ভাগ।

আসুন, এইবার সংক্ষেপে জেনে মোবাইল ফোনের ইতিহাস –

মোবাইল ফোনের ইতিহাস – History of mobile in Bangla

১. পৃথিবীতে সর্বপ্রথম দূরাভাষ যন্ত্র হিসেবে ১৮৭৬ সালে আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল আবিষ্কার করেন টেলিফোন যন্ত্র। এরপর, ক্রমশ বহু বিবর্তনের মাধ্যমে তার-বিহীন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মুঠোফোনের ধারণার সৃষ্টি হয় বিজ্ঞানী মহলে।

২. টেলিকম্যুনিকেশনের উন্নতির সাথে সাথে, ১৯০৮ সালে তারবিহীন টেলিফোন হিসেবে পেটেন্ট পায় ইউনাইটেড স্টেটসের কেন্টাকি শহর।

৩. ১৯৪০ সালে AT&T নামের মার্কিন টেলিকম্যুনিকেশন সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা সেলস (cells) তৈরী করেন মোবাইল ফোন বেস স্টেশনের জন্যে।

৪. প্রথমদিকের দূরাভাষ যন্ত্রগুলো আসলে two-way রেডিও হিসেবে কাজ করতো এবং সেই যন্ত্রগুলোতে শব্দের প্রেরণ ছিল দুর্বল এবং আওয়াজ মাঝে মাঝেই আসা বন্ধ হয়ে যেত। এই মোবাইলগুলো ব্যবহার করা হতো জরুরি পরিস্থিতিতে।

৫. এই সময়ে, প্রতিটা কলের জন্যে আলাদা আলাদা বেস স্টেশন ব্যবহার না করে, একটি মাত্র শক্তিশালী বেস স্টেশন ব্যবহার করা হতো। তাই, মোবাইল নেটওয়ার্ক একটি সীমিত এলাকার মধ্যেই শুধু আদান-প্রদান করা সম্ভব হতো।

৬. এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন ১৯৭৩ সালে মটোরোলা কোম্পানিতে কর্মরত মার্টিন কুপার ও জন এফ. মিচেলের তত্বাৱধানে আবিষ্কৃত হয় পৃথিবী প্রথম মোবাইল DynaTAC 8000X।

এই মডেলটি ১৯৮৩ সালে প্রথম জনগণের ব্যবহারের উদ্দেশে বাজারে আনা হয়। তখন এই মডেলটির দাম ছিল প্রায় ৪০০০ মার্কিন ডলার।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে, মটোরোলার এই মডেলগুলোর থেকেই জেনারেশন-জিরো টেকনোলজির আবির্ভাব হয়। আর এখনকার বেশিরভাগ ফোনই নির্ভর করে  3G ও 4G টেকনোলজির উপর। আর, কিছুদিন পরেই জনগণের ব্যবহারের জন্যে উপলব্ধ হবে 5G টেকনোলজির ফোন।

মোবাইল ফোনের প্রকারভেদ

টেলিযোগাযোগ (telecommunication) ব্যবস্থা এবং তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মোবাইল ফোন নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গেছে। বর্তমানে, মার্কেটে আপনি বেশ কয়েক ধরণের মুঠোফোনে দেখতে পাবেন; সেগুলো হল-

স্মার্টফোন

এই ধরণের ফোনগুলো বাজারে সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। শুধুমাত্র ফোন দেওয়া-নেওয়া ছাড়াও এই যন্ত্রগুলো নানারকম কাজ করতে সক্ষম। এই স্বয়ংসম্পূর্ণ মুঠোফোন হল একটি ছোট গণকযন্ত্র।

এই উন্নতমানের ফোনগুলোতে থাকে ক্যামেরা, ক্যালকুলেটর, রেডিও, ওয়াই-ফাই কানেক্টিভিটি, Bluetooth মাধ্যম ও নানারকমের সুবিধা।

ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া অনায়াসেই ব্যবহার করতে পারেন এই ফোনগুলোতে। বাধ্যতামূলকভাবে, এই মডেলগুলিতে একটি টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে থাকে।

এছাড়াও, আপনি এই ফোন আপনার অফিসার কাজ, যেমন- ডকুমেন্ট তৈরী কিংবা স্প্রেডশীটও তৈরীতে ব্যবহার করতে পারবেন।

সেল ফোন

খুব সাধারণ এই ফোনগুলোতে qwerty কীবোর্ড থাকা দেখা যায়। স্মার্টফোনের তুলনায় এই মডেলগুলো আকারে ছোট এবং এগুলোতে ডিসপ্লেও ছোট আকারের থাকে।

এই ফোনগুলোতে থাকে সাধারণ কিছু অপারেশন, যেমন- ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি, ক্যামেরা, মেমরি কার্ড স্টোরেজ এবং অন্যান্য।

আপনি খুব সীমিত পরিমাণে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন এই ধরণের মুঠোফোনে। স্মার্টফোনের মতো মাল্টিটাস্কিং না করতে পারলেও, কিছু সাধারণ হিসাব-নিকাশ এই মোবাইলগুলোতে খুব সহজেই করা যায়।

প্রিপেইড ফোন

যারা নিজের ফোনে মাল্টিমিডিয়া বা মাল্টিটাস্কিং (একসাথে অনেকগুলো প্রোগ্রাম চালানো) পছন্দ করেন না, তারা প্রিপেইড ফোনগুলোকে বেশ উপযোগী মনে করেন।

এতে, আপনি শুধু সেলুলার ডাটা ব্যবহার করে ফোন করতে, ধরতে এবং এসএমএস পাঠাতে বা গ্রহণ করতে পারবেন।

এই ফোন আপনাকে কিছু পরিমান অর্থের বিনিময়ে সীমিত কলের সময় বা সীমিত মেসেজের পরিষেবা দিয়ে থাকে। আর যেখানে প্রিপেইড-এর অর্থই হল অগ্রিম পয়সার বিনিময়ে পরিষেবা প্রদান।

আনলকড ফোন (unlocked)

আনলকড ফোনগুলোর আসল সুবিধা হলো আপনার ফোন কোনো নির্দিষ্ট নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডারের অন্তর্ভত নয়। আপনি আপনার পছন্দমতো সার্ভিস প্রোভাইডারের থেকে কলিং এবং এসএমএস প্ল্যান ব্যবহার করতে পারেন।

তবে, বাজারে সহজলভ্য সেল ফোনগুলোর তুলনায় এই আনলকড মডেলগুলো অনেকটাই জটিল এবং দামী। এছাড়া, সঠিক ব্যবহারিক জ্ঞান না থাকলে এই ফোনগুলো ব্যবহার করাও বেশ কঠিন।

চলুন, এবার আলোচনা করা যাক, মোবাইলের কয়েকটা মুঠোফোনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে।

মোবাইলের বৈশিষ্ট্য – Features of mobile in Bengali

১. প্রতিটি দূরাভাষ যন্ত্র ব্যহারকারীদের সহজে ফোন করার বা ধরার সুবিধা প্রদান করে।

২. যেকোনো মোবাইল ফোনে থাকে এক বা একাধিক সিম কার্ড ব্যবহারের ব্যবস্থা। এই সিমকার্ডগুলো আকারে অনেকটা পাতলা, চ্যাপ্টা এবং ছোট ডাক-টিকেটের মতো দেখতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সিম কার্ড পোর্টগুলো ব্যাটারির নিচে থাকে। নেটওয়ার্ক পরিষেবাদাতাদের সিম কার্ডগুলো একে ওপরের থেকে আলাদা এবং প্রত্যেক কোম্পানির সিমের পরিষেবাও একে অন্যের থেকে আলাদা।সাধারণত, Global System for Mobile Communication (GSM) মডেলগুলোতে কেবল একটা সিম কার্ড রাখার ব্যবস্থা থাকে।

৩. প্রতিটি মোবাইল চলে rechargeable ব্যাটারীর উপর। অর্থাৎ, ব্যাটারিগুলোকে বিদ্যুতের সাহায্যে চার্জ করলেই আপনি বারবার আপনার ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। দরকারে, ব্যাটারি বদলাতেও পারবেন।

৪. এই প্রতিটি যন্ত্রের একটি করে ইউনিক বা একক International Mobile Equipment Identity (IMEI) নম্বর থাকে। এই নম্বরটির সাহায্যে খুব সহজেই ট্র্যাকার সিস্টেমগুলো আপনার হারিয়ে বা চুরি হয়ে যাওয়া মোবাইল খুঁজে দিতে পারে।

৫. আপনাকে মোবাইল চালাতে হলে, কীবোর্ড বা টাচস্ক্রিনের মাধ্যমে ইনপুট দিতে হবে। ঠিক যেমনভাবে আপনি আপনার কম্পিউটারকে কীবোর্ড বা মাউসের সাহায্যে নিদের্শ দেন ঠিক সেভাবেই আপনাকে আপনার মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়।

৬. প্রতিটি মোবাইল ফোনে আছে একক International Mobile Subscriber Identity (IMSI) নম্বর। এই নম্বরের সাহায্যে আপনার এবং আপনার মোবাইলের লোকেশন খুব সহজেই খুঁজে নেওয়া যায়।

মোবাইল ফোন কেন এতো জনপ্রিয় ?

এখন মানুষের ঘরে ঘরে ফোন বা স্মার্টফোনে রয়েছেই। তাই চোখ বুজে বলা যায়, যেকোনো যুগান্তকারী আবিষ্কারের থেকে মোবাইল আবিষ্কারে বেশি সুবিধা হয়েছে আপামর জনসাধারণের।

তবে, এই মুঠোফোনের জনপ্রিয়তা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এর কারণ হিসেবে বেশ কতগুলো স্পষ্ট পয়েন্ট অবশই রয়েছে; সেগুলো হলো –

১. মুঠোফোন আর্থিকভাবে যথেষ্ট সহজলভ্য এবং সব শ্রেণীর মানুষ তাদের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী কিনতে পারেন।

২. মোবাইল ডিভাইস খুব সহজেই মানুষ নিজের সাথে করে যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারে।

৩. কম খরচে ইন্টারনেট পরিষেবা নিজের মোবাইলের মাধ্যমে ব্যবহার করা সম্ভব।

৪. পুরোনো ল্যান্ডলাইন ফোনের বিল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে, আপনি খুব কম টাকার রিচার্জ করলেই পাচ্ছেন কল ও এসএমএস-এর সুবিধা।

৫. স্মার্টফোনগুলোতে আপনি কোনোরকম টিভি বা রেডিও ছাড়াই খবর, প্রোগ্রাম উপভোগ করতে পারছেন।

৬. বর্তমানের android ফোন থেকে খুব সহজেই আর সুরক্ষার সাথে যেকোনো জায়গাতে টাকা লেন-দেন করতে পারছেন সাধারণ মানুষ।

৭. আপনি গান শুনতে চান? সিনেমা দেখতে চান? ওয়েব সিরিজ দেখতে চান? এইসবই আপনি পাবেন আপনার ওই স্মার্টফোনে।

৮. কিছু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বা এপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনি দ্রুত কোনো ছবি, ভিডিও আপনার লোকেদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

৯. পুলিশের তদন্তের কাজেও এই নতুন মোবাইল ব্যবস্থা বেশ উপযোগী। দুষ্কৃতীদের লোকেশন বা কল রেকর্ড দেখে অনায়াসেই পুলিশরা তাদের তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন।

আরও এই রকম বহু কারণের জন্যে আজকের যুগে মোবাইলের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠেছে।

মোবাইল ফোনের সুবিধা কি কি ?

শুধুমাত্র যোগাযোগ মাধ্যমের উন্নতিসাধনের উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোনের জন্ম হলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই মুঠোফোনের ব্যবহারিক দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে বহুমুখী।

ইন্টারনেট পরিষেবার সাথে মোবাইল পরিষেবার মেলবন্ধনে স্মার্টফোনের চাহিদা দিন দিন আকাশছোঁয়া হয়ে পড়ছে।

মাল্টিমিডিয়ার উপস্থিতির ফলে মানুষ জীবনের প্রায় প্রত্যেকটি কাজে এই অত্যাধুনিক, প্রযুক্তি-নির্ভর মুঠোফোনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।

অনেকগুলো মিডিয়ার সম্ভার হওয়াও মোবাইল ফোনের বেশ কতগুলো সুবিধা আছে –

১. মাল্টিমিডিয়ার সমাবেশ হওয়ায় সামান্য যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ থেকে শুরু করে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট তৈরী করা সবকিছুই করতে সক্ষম এই মুঠোফোন।

২. গান শোনা, রেকর্ড করা, ভিডিও রেকর্ডিং থেকে এডিটিং, এমনকি কিছু কিছু স্মার্টফোনে আপনাকে ডিজানিং কিংবা পেইন্টিং করার সুবিধাও দিয়ে থাকে।

৩. অনলাইন ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে আজকাল অনেক মানুষই মোবাইল ব্যাঙ্কিং-এর উপর নির্ভর করে থাকেন।

৪. পাসপোর্ট থেকে শুরু করে বার্থ সার্টিফিকেট সমস্ত সরকারি নথিও আজকাল মোবাইল থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করে ডাউনলোড, আপলোড বা কারেকশন করা যায়।

৫. ঘুরতে গিয়ে আর হারিয়ে যেতে হবে না, কারণ বেশিভাগ মোবাইলেই থাকছে লোকেশন ট্র্যাকিং এবং আরও অন্যান্য সুবিধা।

৬. এই করোনা মহামারীর সময়, স্মার্টফোনের চাহিদা দ্বিগুণ হওয়ার কারণ অনলাইন পড়াশোনা এবং অনলাইন অফিস। তাই আজকাল পড়াশোনা ও অফিস হয়ে উঠেছে মোবাইল নির্ভর।

৭. আজকাল ট্রেন, প্লেন, বাসের টিকিট, স্কুল, কলেজের এডমিশনও হয়ে পড়ছে মোবাইল নির্ভর। ওলা বা উবেরে গাড়ি বুক করতে হলেও দরকার একটা স্মার্টফোনের।

৮. অনেক ডাক্তাররাও আজকাল ভিডিও কলের মাধ্যমে দিচ্ছেন টেলি-কন্সাল্টেশন। অর্থাৎ, বাড়িতে বসেই একটা মোবাইলের মাধ্যমে আপনি আপনার মেডিকেল চেক-আপ করিয়ে নিতে পারছেন।

বিজ্ঞান যেমন আশীর্বাদ ও অভিশাপ দুই-ই বটে। তেমনই মুঠোফোনেরও আছে ভালো এবং মন্দ দিক।

দেখে নেওয়া যাক, কি কি আছে মোবাইলের অপকারিতা ?

মোবাইলের অপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক

১. স্মার্টফোনের আসক্তি একটি নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই করোনা মহামারী এবং লকডাউনের সময়। অফিস থেকে শুরু করে বিনোদনের মাধ্যম সব কিছুরই মাধ্যম হয়ে উঠেছে এই মোবাইল ফোন।

গবেষণাতে দেখ যাচ্ছে, একজন মানুষ প্রায় সারাদিনে ১০ ঘন্টার কাছাকাছি সময় এই মুঠোফোনে ব্যয় করছেন। যার ফলে, তার জীবনের অনেকটা সময় স্ক্রিনের সামনেই অতিবাহিত হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাঘাত ঘটছে।

২. শিশুদের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে মোবাইলের ব্যবহার এর বিষয়টা বিপদের সংকেত ডেকে আনছে। অনেক সময় ইন্টারনেট মাধ্যমে তারা অ্যাডাল্ট কনটেন্ট বা হিংসাত্মক বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হচ্ছে, যা শিশুদের মধ্যে বিকৃত চিন্তাভাবনার জন্ম দিতে পারে।

এর ফলে, তাদের মনের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে।

৩. অনলাইন মাধ্যম হওয়ার ফলে বেশ কিছু অসাধু লোকের অসাধু ব্যবসার রমরমা বাড়ছে। খুবই কুখ্যাত ব্যবসাগুলির মধ্যে একটি হল চাকুরীর স্ক্যাম। যেখানে কিছু ভুয়ো প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে ঠকিয়ে তাদের থেকে টাকা রোজগার করছে।

কিংবা, রয়েছে অনলাইন ATM কার্ডের স্ক্যাম, যেখান থেকে অনেক মানুষ কোটি কোটি টাকা হারিয়েছেন।

৪. এছাড়াও আছে, সাধারণ মানুষের তথ্য নিরাপত্তায় (data security) দ্বন্দ্বের অবকাশ। ইন্টারনেট মাধ্যমে অনেক স্পাই এজেন্সী রয়েছে, যারা সাধারণ মানুষের তথ্য নিয়ে অনেক সময়ই অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করে থাকে। কিংবা আপনার অজান্তেই আপনি আপনার পরিচয় সেই অচেনা এজেন্সীগুলোকে দিয়ে থাকেন, যা একেবারেই কাম্য নয়।

৫. বেশি সময় মোবাইল ব্যবহার করতে থাকায় মানুষের আবেগগুলো শিথিল হয়ে পড়ছে। মানুষ আগের মতো সামনাসামনি আড্ডা দেওয়া, গল্প করা, প্রায় ভুলতে বসছে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি থেকে মানুষ নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে এবং সেখান থেকে তৈরী হচ্ছে হতাশা।

এই মোবাইল আসক্তি অনেক সময় জন্ম দেয় অনিদ্রার মতো রোগের। মানুষের ক্রিয়েটিভ কাজকর্ম যেমন- গান গাওয়া, আঁকা, নাচ করা এইসবের ইচ্ছেও নষ্ট হচ্ছে।

৬. মোবাইল ডিভাইস থেকে যে তেজস্ক্রিয় রশ্মি (রেডিওএক্টিভ রেস) বেরোয়, তা থেকে দেখা দিতে পারে শরীরে ক্যান্সার। এছাড়াও, দেখা যেতে পারে চোখের, ঘাড়ের ও পিঠের সমস্যা।

আমাদের শেষ কথা,,

দ্রুত গতিশীল এই জীবনে, যেখানে ইন্টারনেট সারা বিশ্বকে ভুবন গ্রামে (global village) পরিণত করেছে, সেখানে মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকা হল এক বড় দুঃসাধ্য কাজ।

তাই আমাদের উচিত, রয়ে-সয়ে এই প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো ব্যবহার করা এবং খারাপ দিকগুলোকে বাদ দেওয়া, যাতে আমার সম্পূর্ণভাবে নিজেদের উন্নতিসাধন করতে পারি।

আশা করি, মোবাইল ফোন রচনা (Mobile Phone Essay in Bengali), নিয়ে লিখা আমাদের আজকের আর্টিকেল বা আলোচনাটি আপনাদের ভালো লেগেছে।

যদি আজকের মোবাইল ফোন অনুচ্ছেদ রচনা আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশই আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন।

এবং আমরা অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামতের।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *