সোশ্যাল মিডিয়া কি ? (What is social media in Bengali?) বা সোশ্যাল মিডিয়া বলতে কি বুঝায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক, উপকারিতা, ব্যবহার ইত্যাদি এই প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে আজকে আলোচনা করতে চলেছি।
আমাদের এই ইন্টারনেট-নির্ভর ডিজিটাল যুগে আমরা কম-বেশি সবাই-ই কোনো না কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত।
গণনাতে দেখা গেছে যে, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী ৪.৫৫ বিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীরা রয়েছে নানান ধরণের সোশ্যাল মিডিয়াতে।
এইবার আপনারা যদি জানতে চান, যে সোশ্যাল মিডিয়া কাকে বলে বা এর মানে কি, তবে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা বিস্তারিতভাবে তা জানতে পারবেন।
এছাড়াও, আমাদের এই লেখা থেকে আপনারা সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কেও একটা স্পষ্ট ধারণা পেতে চলেছেন।
তাই, দেরি না করে, প্রথমে জানা যাক, What is social media ?
সোশ্যাল মিডিয়া কি বা কাকে বলে ?
সামাজিক মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়া (social media) হল এক ধরণের কম্পিউটার-ভিত্তিক প্রযুক্তি।
যে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ডিজিটালভাবে ধারণা, চিন্তাভাবনা ও তথ্য ভাগ করে নেওয়া যায়।
যেহেতু, এই সামাজিক মাধ্যমগুলো হল ইন্টারনেট-ভিত্তিক; তাই এইগুলো ব্যবহারকারীদের তাদের ব্যক্তিগত নথি, তথ্য, ভিডিও ও ফটোর মতো সামগ্রীকে দ্রুত ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সুবিধা দিয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে, ব্যবহারকারীরা কোনো কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের সাহায্যে ওয়েব-ভিত্তিক সফ্টওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে, নানান সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত হতে পারে।
বিশ্বের সবথেকে বেশি সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা আমেরিকা ও ইউরোপে থাকলেও, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া সর্বাপেক্ষা বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের তালিকায় শীর্ষে উপস্থিত রয়েছে ৷
এই ধরণের মিডিয়া হল প্রধানত ব্যবহারকারীর দ্বারা তৈরি কনটেন্ট ও ব্যক্তিগতকৃত প্রোফাইল গুলোর সমষ্টি নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে ৷
বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক মাধ্যম নেটওয়ার্ক গুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হল ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ও ইউটিউব।
তাহলে বুঝলেন তো, সোশ্যাল মিডিয়া কি বা সোশ্যাল মিডিয়া বলতে কি বুঝায় ?
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার:
এখনকার সময়ে, অনলাইন চ্যাট থেকে শুরু করে, যেকোনো ব্যবসার সাফল্যের গল্পের পিছনেই রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার এক বিশাল অবদান।
অনলাইন ব্র্যান্ডিং হোক কিংবা সচেতনতা তৈরি করে অনলাইন ক্রেতা খোঁজা – যেকোনো কাজের সাথেই সামাজিক মিডিয়া গুলো আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ছে।
তাই, এখানে বিস্তারিতভাবে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে নিচে আলোচনা করলাম –
১. যোগযোগের অন্যতম মাধ্যম:
ভার্চুয়াল সামাজিক মাধ্যমের সবথেকে বড় সুবিধা হল এখানে কম খরচে, একসাথে বহু সংখ্যক, বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে নিমেষে বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
আপনি ব্লগ বা আর্টিকেলের অধিকারী হয়ে থাকুন, কিংবা যেকোনো পপ্যুলার মিডিয়াতে আপনার প্রোফাইল থাকুক না কেন,
আপনি যদি জন সাধারণের উদ্দেশ্যে কোনো তথ্য দিতে চান, তাহলে এই মিডিয়াগুলোর সাহায্যে আপনি সহজেই তা দিতে পারবেন।
এমনকি, এই ধরণের মিডিয়াগুলোকে বেশিরভাগ সময়েই যোগাযোগ (কম্যুনিকেশন) বহুমুখী হয়।
অর্থাৎ, আপনার বার্তার উত্তরে যে কেউ আপনার সাথে যোগযোগ করতে, কমেন্ট করতে বা আপনার বক্তব্য শেয়ার করতে পারবে।
যার ফলে, এর মাধ্যমে শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থাও তৈরী করা যায়।
২. কোলাবোরেশন বা পারস্পরিক সহযোগিতা:
সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমগুলো একে অপরের সাথে নানানভাবে সংযুক্ত।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি যখন গুগল ডক ও উইকিপিডিয়ার মতো অনলাইন তথ্য প্রদানকারী প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে তথ্য শেয়ার করেন, তখন আপনার ভাগ করে নেওয়া তথ্য পৃথিবীর যেকোনো কোণে থাকা যেকোনো মানুষ ডাউনলোড ও আপলোড করতে পারে।
তাই, সোশ্যাল মিডিয়াকে আমরা কোলাবোরেশনের মাধ্যম বলে থাকি;
কারণ এর থেকে অনেক সংখ্যক ব্যবহারকারীরা তথ্যের সুবিধা ভোগ করে নিজেদের মধ্যে জ্ঞান শেয়ার করতে পারে।
৩. মতামত ও রিভিউ:
জনগণের মতামত প্রকাশের এক নির্ভরযোগ্য জায়গা হল সোশ্যাল মিডিয়া।
এখান থেকে আমরা খুব সহজেই আমাদের কাছে থাকা দোকান, রেস্টুরেন্ট ও নানা ব্যাপারেই চট করেই অন্যান্য মানুষের মতামত জেনে ফেলতে পারি।
এমনকি, সামাজিক মাধ্যম (যেমন- ফেইসবুক, ইন্সট্রাগ্রাম) ব্যবহারকারীদের করা রিভিউ বা মতামতের উপর ভিত্তি করেই আমরা অনলাইন কোনো প্রোডাক্ট কিনবো কি কিনবো না – তাও অনেকসময় ডিসাইড করে থাকি।
এমনকি, আপনি কোনো প্রোডাক্ট লঞ্চ করে খুব সহজেই অন্য ব্যবহারকারীদের কাছে রিভিউ করার আর্জিও জানাতে পারবেন এখানে।
৪. ব্র্যান্ড পর্যবেক্ষণ:
যেহেতু, এটা জনমত গঠনের একটা প্রধান জায়গা, তাই সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর ব্যবহার, মূলত যেকোনো ব্র্যান্ডকে নিজের ব্র্যান্ড পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে।
এখান থেকে ব্র্যান্ডগুলো বুঝতে পারে যে, ব্যবহারকারীরা তাদের ব্র্যান্ডের পণ্য বা পরিষেবা সম্পর্কে কী বলছে।
এই মাধ্যমগুলো ব্র্যান্ডগুলোকে ওয়েবে তাদের খ্যাতি পরিচালনা করতেও সাহায্য করে৷
এমনকি, যদি কেউ সেই ব্র্যান্ড সম্পর্কে নেতিবাচক কথাও বলে, তবে তারা খুব সহজেই সেই সমস্যার সমাধান করে নিতে পারে।
৫. বিনোদন:
বিনোদন জগতের (যেমন- গেমিং ইন্ডাস্ট্রি, স্পোর্টস, মুভিস ও টেলিভশন জগৎ) প্রায় সবই সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভরশীল।
বিনোদনের এমন অনেক চ্যানেল আছে, যেগুলো লাইভ বিনোদন প্রচার করতে ব্যাপকভাবে সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে।
এই বিনোদনের সাইটগুলো মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের পাশাপাশি তাদের বিনোদনও দেয়।
নানান বিনোদনমূলক ভিডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানীগুলো তাদের দর্শকদের বিনোদন প্রদানের সাথে সাথে তাদের পণ্য বা পরিষেবার প্রতিও আকৃষ্ট করে তোলে।
৬. মিডিয়া শেয়ারিং:
মিডিয়া শেয়ার করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সুপরিচিত সাইটের মধ্যে প্রধান হল ইউটিউব।
পৃথিবীর প্রায় ৪৬৭ মিলিয়ন মানুষ এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে থাকে ৷
এই ধরণের সাইটগুলো ব্যবহারকারীদের নিজস্ব চ্যানেল তৈরি করে, একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে।
এমনকি, স্পটিফাই, উইংকের মতো সাইটগুলোও ব্যবহারকারীদের অনলাইন মিউজিক শেয়ার করতে দেয়।
তাই, সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে ব্যবহারকারীরা সহজেই নানান মিডিয়া ডাউনলোড, আপলোড ও শেয়ার করতে পারে।
৭. পেইড বিজ্ঞাপন:
ফেইসবুক, টুইটার, লিঙ্কডিন ও পিন্টারেস্টের মতো সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহারকারীদের পেইড বিজ্ঞাপন চালাতে অনুমতি দেয় ৷
এই সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলোর ইতিমধ্যেই অগুনতি ব্যবহারকারী রয়েছে।
তাই, কোনো ব্র্যান্ড তার পণ্য ও পরিষেবাগুলোর অনলাইন উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্যে খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তার সম্ভাব্য গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে পেইড বিজ্ঞাপন চালাতে পারে৷
এই বিজ্ঞাপনগুলো সম্ভাব্য গ্রাহকদের দেখানো হয় এবং সেখান থেকে ব্র্যান্ডগুলোর লিড জেনারেশন হওয়া সহজ হয়ে ওঠে।
সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতা:
নীচে, ব্যবহারকারীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতাগুলো নিয়ে একটা তালিকা তৈরী করা হল –
১. সম্পর্ক তৈরী করা:
সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের নতুন নতুন মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে সাহায্য করে।
বর্তমানে, এই মাধ্যমগুলো ধীরে-ধীরে আমাদের ব্যক্তিগত ও পেশাদারির জীবনের দূরত্বকে মুছে ফেলছে।
আপনি আপনার পেশাদারি জগতের মানুষজনদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত থেকে আপনার নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারবেন।
এছাড়াও, আপনার ব্যক্তিগত জীবনে থাকা নানান চেনা-অচেনা মানুষের সাথেও বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন।
২. পারদর্শিতা ভাগ করে নেওয়া:
এই সোশ্যাল মিডিয়া হল আপনার পারদর্শিতাকে তুলে ধরার একটা শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
আপনার যে বিষয়ে জ্ঞান বেশি, আপনি সেই জ্ঞান এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে দিলে, তাদের মধ্যে আপনার প্রতি একটা দৃঢ় বিশ্বাস গড়ে উঠবে।
যার ফলে, পেশাদারি ও ব্যক্তিগত জীবনেও আপনার খ্যাতি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরী হতে পারে।
৩. দৃশ্যমান হওয়া:
আপনি যদি আপনার দক্ষতা ভাগ করে নেওয়ার জন্যে প্রতিনিয়ত সময় দেন ও আপনার সামাজিক চ্যানেলগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন, তবে, আপনার দৃশ্যমানতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
এমনকি, আপনি একজন থট লিডারও হয়ে যেতে পারেন।
আপনার বিষয়বস্তুর মান ভালো হলে, অবশ্যই তা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার হয়।
আর, যত বেশি শেয়ার হবে, ততই আপনার বিষয়বস্তু অনেক বেশি সংখ্যক লোকের কাছে পৌঁছতে পারে।
তবে, শুধু বিষয়বস্তু শেয়ার করলেই চলে না, বরং, দর্শকদের ধরে রাখতে গেলে, তাদের সাথে নিয়মিত কথোপকথনের মাধ্যমে একটা সম্পর্ক তৈরী করা আপনার কাছে একান্তই জরুরি হয়ে পড়ে নিজের দৃশ্যমানতাকে ধরে রাখার জন্যে।
৪. নিজেকে শিক্ষিত করে তোলা:
সোশ্যাল মিডিয়াতে নানান ধরণের তথ্যের বিশাল সম্ভার রয়েছে।
যার মধ্যে থেকে আপনার যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুকে বেছে নিয়ে নিজেকে ডিজিটালভাবে শিক্ষিত করে তোলার অপশন থাকে।
এখানে, আপনি এমন তালিকা তৈরি করতে পারছেন, যা আপনার প্রিয় ব্যক্তি, বস্তু ও চিন্তাভাবনা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে।
এর মাধ্যমে, আপনি সহজেই আপনার কাছাকাছি ঘটা ব্যাপারগুলো সম্পর্কে জানতে পারছেন।
৫. যখন খুশি সংযুক্ত হওয়া সম্ভব:
মানুষের সাথে যেকোনো সময়ে, যেকোনো জায়গা থেকে যুক্ত হতে সামাজিক মাধ্যমের জুড়ি মেলা ভার।
কোনো ইভেন্ট হওয়ার আগে, পরে ও তা চলাকালীন আপনি যখন খুশি এই মাধ্যমের সাহায্যে মানুষের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারেন।
এই মাধ্যমের সাহায্যে খুব সহজেই ও কম ব্যয়ে একসাথে বহু মানুষের কাছে পৌঁছোনো সম্ভবপর হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক:
অনেক সুবিধা ও উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও, এই সোশ্যাল মিডিয়ার নানান ক্ষতিকারক প্রভাব রয়েছে।
যার মধ্যে কয়েকটি নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল –
১. বাস্তবের সাথে ভার্টুয়াল জীবনের আকাশ-পাতাল ফারাক:
সোশ্যাল মিডিয়াতে থাকা কনটেন্টগুলো বেশিরভাগ সময়েই ম্যানিপুলেট করা থাকলেও, সেগুলো আপনার মনে আপনার অস্তিত্ব ও জীবন সম্পর্কে নানা ধরণের দ্বন্দ্ব তৈরী করতে পারে।
একইভাবে, আমরা জানি যে, সকলের জীবন সোশ্যাল মিডিয়াতে পারফেক্ট দেখানোর প্রবণতা থাকলেও, আদতেও তা সবসময় সত্যি হয় না।
কিন্তু তাও, বারবার বারবার অন্যের জীবনের কেবলমাত্র ভালো ব্যাপার দেখতে দেখতে আমাদের মনে কিন্তু হিংসা বা অসন্তোষের অনুভূতি তৈরী হতেই পারে।
যা আমাদের জীবনে অকারণে অশান্তি ডেকে আনতে পারে।
২. হারিয়ে ফেলার ভয় (FOMO):
ইনস্টাগ্রাম ও ফেইসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আপনার নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতিগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
তখন আপনার মনে হতে পারে যে, অন্যরা আপনার চেয়ে বেশি ভালো জীবনযাপন করছে।
আর, আপনি এমন কিছু জিনিস মিস করছেন, যা আপনার আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করে আপনার উদ্বেগকে বাড়িয়ে দিতে পারে কিংবা বেশি করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্যে উৎসুক করে তুলতে পারে।
৩. একাকিত্ব:
নানান সমীক্ষাতে দেখা গেছে যে, ফেসবুক, বা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের মনে একাকীত্বের অনুভূতি বাড়িয়ে দিতে পারে।
অন্যদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার কমিয়ে দিলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে একাকী ও বিচ্ছিন্নতা বোধ কমে গিয়ে তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে।
৪. হতাশা ও উদ্বেগ:
মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আমাদের সামনাসামনি কথোপকথনের প্রয়োজনীয়তা আছে।
চোখে চোখ রেখে কথা বললে তা আমাদের উদ্বেগ কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে আর আমাদের মেজাজও ঠিক রাখে।
তাই ব্যক্তিগত যোগাযোগের তুলনায়, আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় ব্যয় করেন তবে, আপনি বেশি উদ্বেগ ও বিষণ্নতার শিকার হতে থাকবেন।
৫. সাইবার বুলিং:
সাইবার বুলিং বা সোশ্যাল মিডিয়াতে অন্য মানুষকে নিয়ে টোন-টিটকিরি করা একটা নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ব্যবহারকারীরাই আপত্তিকর মন্তব্যের শিকার হয়।
যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই ক্ষতিকারক।
বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো খারাপ গুজব, মিথ্যা ও অপব্যবহার ছড়ানোর মাধ্যমেও পরিণত হতে পারে, যা দীর্ঘস্থায়ীভাবে মানুষের মনের উপর খারাপ প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
৬. আত্মমগ্ন হয়ে পড়া:
সোশ্যাল মিডিয়াতে সারাক্ষণ ধরে নিজের অন্তর্নিহিত চিন্তাভাবনার প্রকাশ, আপনাকে অস্বাস্থ্যকরভাবে আত্মকেন্দ্রিক করে তুলতে পারে।
যা আপনাকে বাস্তব জীবনের সাথে বিচ্ছিন্নও করে দিতে পারে।
অন্য আরও চার-পাঁচটা সাধারণ জিনিসের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ারও ভালো ও খারাপ দুই দিক রয়েছে।
তবে, সবটাই আপনার উপর নির্ভর করে যে, আপনি কোনদিকটাকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন, আর কোনদিকটা ব্যবহার করবেন না।
আমাদের আজকের সোশ্যাল মিডিয়া কি (About social media in Bengali) নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।
লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের সাহায্যে জানাবেন।