আপনিও কি একজন স্টুডেন্ট? কলেজে পড়াশোনা করার পাশাপাশি পার্ট-টাইম ইনকামের উপায় গুলো খুঁজছেন?
যদি হ্যা, তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি একজন ছাত্র হিসেবে আপনার প্রচুর কাজে আসতে পারে। কেননা, আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনার মূল বিষয়টি হলো, স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব এর সেরা আইডিয়া গুলো কি সেই নিয়ে। মানে, কলেজে পড়ালেখা করা ছাত্ররা কি কি অনলাইন বা অফলাইন মাধ্যমে পার্ট-টাইম ইনকামের সুযোগ গুলো পাবেন, সেই ইনকামের মাধ্যম গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
এমনিতে, যখন পার্ট-টাইম ইনকামের উপায় গুলোর বিষয়ে বলা হয়, তখন অফলাইন জব গুলোর তুলনায় অনলাইন পার্ট-টাইম জব গুলির জনপ্রিয়তা এবং কার্যকারিতা অনেকটা বেশি বলেই আমি মনে করি। আপনি সঠিক পরিকল্পনা, নিয়ম এবং পদ্ধতি গুলিকে অনুসরণ করার মাধ্যমে কাজ করতে পারলে অনলাইনে প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করাটাও অনেক সময় একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
আর এর জন্যে আপনাকে, ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার কি কি অনলাইন কাজ রয়েছে, সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে। চলুন, বেশি দেরি না করে সরাসরি স্টুডেন্টদের জন্য থাকা সেরা পার্ট টাইম জব গুলোর বিষয়ে জেনেনেই।
ছাত্ররা পার্ট-টাইম জব কেন করবেন? কি কি লাভ হবে?
ছাত্ররা বা স্টুডেন্টসরা পার্ট-টাইম জব করার নানান কারণ থাকতে পারে। তবে বেশিরভাক ছাত্রদের ক্ষেত্রেই পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট-টাইম ইনকাম করার মূল উদ্দেশ্য সাইড ইনকাম বা অর্থ উপার্জন করা হয়ে থাকে। ছাত্ররা যখন পার্ট-টাইম ইনকাম করে থাকেন, তখন কেবল অর্থ উপার্জনের বাইরেও অন্যান্য প্রচুর সুবিধা এবং লাভ গুলো পেয়ে থাকেন যেগুলি ভবিষ্যতে তাদের প্রচুর কাজে লাগতে পারে।
আর্থিক স্বাধীনতা
বেশিরভাগ ছাত্ররা এক্সট্রা টাকা ইনকামের উদ্দেশ্যে পার্ট-টাইম জব গুলো করে থাকেন এবং এভাবেই তারা নিজেদের আর্থিকভাবে সমর্থন করে। ইনকাম করা এই অতিরিক্ত অর্থ বা টাকা গুলো তারা নানান কাজে লাগানোর সুযোগ পান। যেমন, শিক্ষাগত খরচ, প্রতিদিনের খরচ, ভবিষ্যতের লক্ষ্যগুলির জন্য সঞ্চয় ইত্যাদি। এতে, ছাত্রদের মধ্যে অনেক আগের থেকেই আর্থিক বা অর্থায়ন বিষয়ক জ্ঞান বিকশিত হতে শুরু করে।
শিক্ষাগত খরচ:
বর্তমান সময়ে ভালো এবং উচ্চ শিক্ষাগত খরচ গুলো প্রচুর পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে, একটি পার্ট-টাইম জব করার মাধ্যমে অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা নিজের পড়াশোনার সাথে জড়িত নানান খরচ গুলির ভার নিতে পারেন। বই কেনা, টিউশনির ফিস, কলেজে আশা যাওয়ার খরচ, ইত্যাদি এই ধরণের খরচ গুলো বের হলেও অনেক।
কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন:
পার্ট-টাইম জব করার মাধ্যমে স্টুডেন্টরা কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করার পাশাপাশি জরুরি দক্ষতা গুলোও নিজেদের মধ্যে বিকশিত করার সুযোগ পেয়ে থাকেন, যেগুলি তাদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ারের জন্যে সত্যি মূল্যবান এবং যথেষ্ট কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। যখন কলেজ জীবন থেকেই আপনার কাছে কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা গুলো থাকবে, তখন কলেজে শেষে একটি ফুল-টাইম চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে এই অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা আপনার জন্যে প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে।
নেটওয়ার্কিং সুযোগ:
পার্ট-টাইম জবের মাধ্যমে ছাত্ররা বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ পান। যেমন ধরুন, co-workers, supervisors, এবং customers ইত্যাদি। আর এই ধরণের যোগাযোগের মাধ্যমে আপনি নিজের জন্য একটি মূল্যবান নেটওয়ার্কিং সুযোগ তৈরি করতে পারবেন। ভবিষ্যতে এই চেনা পরিচিত লোকেরা নানান ভাবে আপনার কাজে লাগতেই পারে।
বেসিক এবং জরুরি দক্ষতা:
স্টুডেন্টরা একটি পার্ট-টাইম জব করার মাধ্যমে নানান basic skills গুলো শেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন। যেকোন দরুন, যোগাযোগ, টিমওয়ার্ক, সমস্যার সমাধান করা, গ্রাহক পরিষেবা, বেসিক কম্পিউটার স্কিল ইত্যাদি। আর এই বেসিক দক্ষতা গুলি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সব সময় কাজে লেগেই থাকে।
ব্যক্তিগত খরচ:
পার্ট-টাইম জব করার মাধ্যমে স্টুডেন্টরা নিজেদের ব্যক্তিগত খরচ গুলি আরামে কভার করে নিতে পারেন। যেমন ধরুন, বিনোদন, ভ্রমণ, বা নিজের শখ পূরণের জন্যে মা-বাবা থেকে সবসময় টাকা চাইতে বা নিতে হবেনা। এতে, যেকোনো ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র নিজেদের পিতামাতার উপর নির্ভর না থেকে নিজের শখ গুলো নিজেই পূরণ করতে পারবেন ছাত্ররা।
তবে মনে রাখবেন, একজন স্টুডেন্ট হিসেবে আপনাকে নিজের পার্ট-টাইম কাজ এবং পড়াশোনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাটা অনেক জরুরি একটি বিষয়। একজন ছাত্র হিসেবে আপনার একাডেমিক পারফরম্যান্স যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেটাও আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে।
স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব – সেরা ৭টি অনলাইন জবের আইডিয়া
স্টুডেন্টরা করতে পারবেন এমন প্রচুর অনলাইন পার্ট-টাইম জবের সুযোগ গুলো বর্তমানে রয়েছে।
পার্ট-টাইম টাকা ইনকাম করার এই অনলাইন জব গুলি প্রচুর ফ্লেক্সিবল এবং আপনি নিজের পছন্দের সময় এবং জায়গা বুঝে কাজ করতে পারবেন। এছাড়া, কাজ করার জন্যে আপনাকে কোথাও যেতেও হবেনা। ঘরে বসে নিজের খালি সময়ে একটি ল্যাপটপ/কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার করে কাজ গুলো করতে পারবেন।
আর এটাই কারণ যার জন্যে স্টুডেন্টদের জন্য থাকা এই অনলাইন পার্ট টাইম জব গুলো অফলাইন পার্ট-টাইম কাজের তুলনায় যথেষ্ট কার্যকর ও সুবিধাজনক।
১. ফ্রিল্যান্সিং
ছাত্ররা নিজেদের দক্ষতা (skills) গুলোকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি এবং ক্লায়েন্ট দের নিজের পরিষেবা গুলো প্রদান করার মাধ্যমে নিয়মিত ইনকাম করার সুযোগ পেতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং জেকেও করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে আপনার শুধুমাত্র একটি বিশেষ দক্ষতা জানা থাকলেও কাজ হয়ে যাবে।
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি content writing, graphic design, web development, social media management, virtual assistance, voice over artist, logo designer ইত্যাদি নানান ধরণের পরিষেবা গুলি প্রদান করতে পারবেন।
কাজ খোঁজার জন্য আপনি নানান ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সাইট গুলিতে গিয়ে নিজের একটি একাউন্ট তৈরি করতে হয়। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলোর চাহিদা প্রচুর এবং কলেজে পড়ালেখা করা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে পার্ট-টাইম আনলিমিটেড টাকা রোজগার করার সেরা উপায় হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
২. অনলাইন টিউটরিং
শিক্ষার্থীরা যদি কোনো বিশেষ বিষয়ে পারদর্শী হন, তাহলে একজন অনলাইন শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বা একাধিক বিষয়ে পড়াশোনা শেখাতে পারবেন।
ইন্টারনেটে এমন নানান online learning platform গুলো রয়েছে যেগুলিতে গিয়ে নিজের একটি account তৈরি করে শিক্ষক হিসেবে নিজেকে রেজিস্টার করতে পারবেন। যেমন ধরুন, Udemy, Vedantu, VipKidTeachers, TutorMe, Chegg ইত্যাদি।
এছাড়া, যদি এই ধরণের অনলাইন পড়াশোনা করানোর পোর্টাল গুলি আপনার কাজে লাগছেনা, তাহলে zoom app এর মতো একটি সেরা গ্রুপ ভিডিও কল করার অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে, অনলাইনে সরাসরি ছাত্রদের টিউশন ক্লাস দিতে পারবেন।
৩. অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েশন:
অনলাইনে দ্রুত টাকা উপার্জন করার সেরা উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো কনটেন্ট তৈরি করা এবং সেগুলিকে মনেটাইজ করা।
এমন অনেক স্টুডেন্ট রয়েছেন যারা বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট গুলো তৈরি করতে পছন্দ করে থাকেন। যেমন ধরুন, অনেকেই ভিডিও রেকর্ড করার মাধ্যমে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পছন্দ করেন। আবার অনেকেই আছে যারা লেখালেখি করতে ভালোবাসেন।
এভাবেই অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা কিন্তু গুছিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে থাকেন। এক্ষেত্রে, স্টুডেন্টরা অনলাইনে পার্ট-টাইম ইনকাম করার ক্ষেত্রে YouTube, Blogging, Podcast ইত্যাদির মতো সেরা অনলাইন ইনকামের উপায় গুলো অবশই ব্যবহার করে দেখতেই পারেন।
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করাটা বর্তমানে একটি ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ৬ মাস থেকে ১ বছর মন দিয়ে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে পারলে, ইউটিউব থেকে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করার বিষয়টা কিন্তু নতুন না।
ঠিক সেভাবেই, লেখালেখি করতে পছন্দ করেন এমন স্টুডেন্টরা blogging শুরু করার মাধ্যমে নিজের ব্লগ থেকে নিয়মিত ইনকাম করার সুযোগ পেতে পারবেন।
ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে শুরুতে আপনাকে নিয়মিত নিজের ব্লগ সাইটে আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করতে হয়। ব্লগে ভিউস এবং ট্রাফিক আসতে শুরু করলে, Google AdSense এর মতো প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে নিজের ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ডলারে টাকা ইনকাম করা যাবে।
সেভাবেই, যারা গুছিয়ে সুন্দর ভাবে কথা বলতে জানেন, তারা নিজের একটি অডিও পডকাস্ট চ্যানেল তৈরি করেও প্রচুর followers এবং subscribers-দের আকৃষ্ট করতে পারবেন। ইন্টারনেটে এমন নানান প্লাটফর্ম গুলো রয়েছে যেগুলিতে নিজের অডিও পরকাস্ট আপলোড করার মাধ্যমে ইনকামের সুযোগ দেওয়া হয়।
৪. অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজ:
স্টুডেন্ট দের জন্যে নিজের খালি সময়ে ঝটপট কাজ করে টাকা ইনকাম করার একটি দারুন উপায় হলো অনলাইন ডাটা এন্ট্রি জবস গুলো। এক্ষেত্রে আপনাকে দিয়ে দেওয়া ডাটা গুলিকে spreadsheets বা databases এর মধ্যে প্রবশে করাতে হয়।
তবে মনে রাখবেন, অনলাইনে এমন প্রচুর ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো, ডাটা এন্ট্রির কাজ দেওয়ার কথা বলে আপনার থেকে টাকা চাইবে। আবার অনেক সময় কিছু কিছু সাইটে কাজ করার পর টাকা না দিয়ে আপনাকে ব্লক করে দেওয়া হয়।
তাই, একটি ভালো এবং জনপ্রিয় ডাটা এন্ট্রি ওয়েবসাইটে কাজ করার পরামর্শ আমি দিবো। এছাড়া, ডাটা এন্ট্রির কাজ পাওয়ার জন্যে আপনারা নানান ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলিও ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন ধরুন: Upwork, Fiverr, Guru.com, Simply Hired, Freelancer.com ইত্যাদি।
৫. অনলাইন সার্ভে সাইট:
অনলাইনে এমন নানান ওয়েবসাইট গুলো রয়েছে যেগুলোতে গিয়ে দিয়ে দেওয়া পেইড সার্ভে গুলো সম্পূর্ণ করে টাকা ইনকাম করা যাবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন product, brand, service, company ইত্যাদির সাথে জড়িত নানান প্রশ্ন এবং আপনার পরামর্শগুলি জিজ্ঞেস করা হয়। আপনাকে শুধুমাত্র নিজের পছন্দমতো প্রশ্নের উত্তর গুলো সিলেক্ট করতে হবে।
একবার সার্ভে গুলো সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপনার একাউন্ট এর মধ্যে টাকা ক্রেডিট করে দেওয়া হবে। সার্ভে ওয়েবসাইট গুলিতে জমা হওয়া টাকা আপনারা PayPal, Gift Card, Bank transfer ইত্যাদি বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে নিতে পারবেন।
মনে রাখবেন, পেইড সার্ভে করে ইনকাম করার ওয়েবসাইট গুলোতে কাজ করার আগে সেই ওয়েবসাইটটি আসল না নকল বা সত্যি টাকা দিবে কিনা সেটা নানান অনলাইন রিভিউ গুলি দেখার মাধ্যমে জেনেনিবেন।
৬. অনলাইনে ছবি বিক্রি করে ইনকাম:
আপনার কাছে যদি প্রফেশনাল ভাবে হাই কোয়ালিটি ছবি তোলার কৌশল গুলো রয়েছে, তাহলে একজন স্টুডেন্ট হিসেবে অনলাইনে ছবি বিক্রি করেও পার্ট-টাইম ইনকাম করার সুযোগ এবং সুবিধা আপনার কাছে থাকছে।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে একটি বা একাধিক স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে নিজের একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। একাউন্ট তৈরি করে নিজের দ্বারা তোলা ছবি গুলিকে সেই সাইটে আপলোড করতে হবে।
যখনি আপনার ছবি গুলিকে কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তিদের দ্বারা কেনা হবে, আপনিও সেই বিক্রির কিছুটা অংশ কমিশন হিসেবে পাবেন। আপনি একই ছবি একাধিক stock image website গুলিতে আপলোড করে বিক্রি করাতে পারবেন। এতে, ইনকামের সুযোগ বাড়বে এবং একই ছবি দিয়ে প্রচুর টাকা ইনকাম করা যাবে।
৭. কনটেন্ট রাইটিং জব করে ইনকাম:
স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব হিসেবে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজটি কিন্তু প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বর্তমানে প্রচুর ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের খালি সময়ে এই কনটেন্ট/আর্টিকেল রাইটিং জব গুলো করার মাধ্যমে ভালো মানের পার্ট-টাইম ইনকাম করে নিতে পারছেন।
ইন্টারনেটে প্রচুর জনপ্রিয় এবং ছোট-বড় blog/website গুলো রয়েছে। এই ব্লগ সাইট গুলোতে নিয়মিত আর্টিকেল লিখে আর্টিকেল জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় দক্ষ কনটেন্ট রাইটারদের। লেখালেখি করতে যদি পছন্দ করেন বা লেখালেখির কাজে অভিজ্ঞতা থাকলে প্রতিদিন একটি বা একাধিক ওয়েবসাইট গুলির জন্য আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে ইনকামের দারুন সুযোগ আপনারা পাবেন।
একটি ১০০০ ওয়ার্ড এর ইউনিক ব্লগ আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে কমেও ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তাই, প্রতিদিন কমেও ১টি করে এবং মাসে অন্তত ২০ দিন আর্টিকেল লিখতে পারলেও প্রায় ৭০০০ থেকে ৮০০০ টাকা ইনকাম করা যাবে।
কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ খোঁজার জন্য আপনারা LinkedIn, Facebook, Freelancing website, ইত্যাদি এই ধরণের প্লাটফর্ম গুলোর ব্যবহার করতে পারবেন। চাইলে, সরাসরি blog/website মালিকের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমেও কাজ খুঁজতে ও পেতে পারবেন।
আমার হিসেবে, স্টুডেন্টদের জন্য অনলাইনে জব করার মাধ্যমে পার্ট টাইম ইনকাম করার এই উপায়টি সেরা।
স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব করার কি কি অফলাইন উপায় আছে?
Offline part-time jobs গুলো কলেজে পড়াশোনা করেন এমন ছাত্রছাত্রীদের জন্য কাজ করে অর্থ উপার্জন করার পাশাপাশি মূল্যবান কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার ক্ষেত্রেও কাজে লেগে থাকে। চলুন, নিচে আমরা সেরা অফলাইন পার্ট-টাইম জব গুলোর বিষয়ে জেনেনেই যেগুলি স্টুডেন্টরা নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি আরামে চালিয়ে যেতে পারবেন।
মোবাইল রিপেয়ারিং কাজ,
কম্পিউটার/ল্যাপটপ রিপেয়ারিং কাজ,
টিউশনি করিয়ে ইনকাম,
অফলাইন ডাটা এন্ট্রি জব,
ফুড ডেলিভারি করুন,
ওয়েব ডিজাইনিং এর কাজ করুন,
গ্রাফিক্স ও লোগো ডিজাইনিং কাজ,
ফিটনেস/জিম প্রশিক্ষকের জব,
কল সেন্টারে পার্ট-টাইম জব,
মোবাইলের সার্ভিস সেন্টারে কাজ করুন,
ক্যাটারিং স্টাফ হিসেবে কাজ করুন,একাউন্টিং ফার্মে পার্ট-টাইম জব।
ওপরে বলে দেওয়া অফলাইন জব গুলোর বাইরেও অন্যান্য প্রচুর জব গুলো রয়েছে যেগুলো একজন স্টুডেন পড়াশোনার সাথে সাথে করতে পারবেন। আমার হিসেবে ছাত্ররা এমন একটি জব করা দরকার যেখান থেকে অর্থ উপার্জনের সাথে সাথে নানান দক্ষতা এবং কৌশল গুলো শেখা যাবে।
FAQ:
প্রশ্ন: পার্ট টাইম জব করে স্টুডেন্টদের কি লাভ হবে?
সরাসরি বলতে গেলে, পার্ট টাইম জব গুলো করার মাধ্যমে একজন স্টুডেন্ট আর্থিক স্বাধীনতা লাভ করার পাশাপাশি নতুন নতুন কৌশল এবং দক্ষতা গুলো শেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এছাড়া এই কৌশল এবং দক্ষতা গুলি তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে প্রচুর কাজে লেগে থাকে।
প্রশ্ন: স্টুডেন্টদের জন্য ঘরে বসে করার মতো কি কি পার্ট টাইম জব রয়েছে?
যদি আপনি একজন স্টুডেন্ট এবং নিজের খালি সময়ে ঘরে বসে কাজ করে এক্সট্রা ইনকাম করতে চাইছেন, তাহলে আর্টিকেল রাইটিং, ব্লগিং, অনলাইনে টিউশনি করানো, একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি এই ধরণের কাজ গুলো করতে পারেন।
প্রশ্ন: পার্ট-টাইম জব করলে কি পড়াশোনার ক্ষতি হবে?
দেখুন, যদি আপনি এমন একটি জব করছেন যেখানে অধিক সময় দিতে হয়না বা যেখানে পড়াশোনার সময়ের বাইরের অতিরিক্ত সময় গুলিকে কাজে লাগিয়ে ইনকাম করছেন, সেক্ষেত্রে পড়াশোনায় ক্ষতি হওয়ার কোনো কারণ থাকতে লাগেনা। তবে এক্ষেত্রে, পড়াশোনা এবং নিজের কাজ দুটোর ক্ষেত্রেই সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার।
আজকে আমরা কি শিখলাম?
স্টুডেন্টদের জন্য একটি পার্ট টাইম জব কতটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সেটা আমিও বুঝি। আমিও একসময় একজন কলেজের ছাত্র ছিলাম যার পকেটে কোনো সময় তেমন টাকা থাকতোনা। তবে, সময় অনেক পাল্টে গিয়েছে। বর্তমান সময়ে অনলাইনে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার প্রচুর উপায় গুলো রয়েছে যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে স্কুল কলেজের প্রচুর স্টুডেন্টরা একজন চাকরি করা ব্যক্তির তুলনায় অনেক টাকা ইনকাম করে নিতে পারছেন।
আমার কথায় বিশ্বাস করতে না পারলে ইন্টারনেটে/ইউটিউবে গিয়ে এমন ব্যক্তিদের প্রচুর ইন্টারভিউ গুলো দেখে নিতে পারেন। একজন স্টুডেন্ট হিসেবে নিজের খালি সময়কে কাজে লাগিয়ে পার্ট-টাইম টাকা রোজগার করার সব থেকে দারুন ও কার্যকর উপায় গুলোর মধ্যে দুটি হলো, “Blogging” এবং Content writing”। এছাড়াও, আরো নানান উপায়ে স্টুডেন্টরা অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
তবে, আপনার পছন্দ, ইন্টারেস্ট এবং কাজের জন্য কতটুকু সময় হাতে থাকছে, এই বিষয় গুলোর ওপর নজর দিয়ে আপনি নিজের জন্য একটি সেরা পার্ট টাইম জব সিলেক্ট করতে পারবেন।