Skip to content

স্মার্টফোন হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করার ৯ টি উপায়

যদি আমরা মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় গুলোর কথা বলে থাকি তাহলে উপায় এমনিতে প্রচুর রয়েছে।

মোবাইল হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করার আগে আপনাকে এইটা ভালো করে দেখে নিতে হবে যে আপনি নিজের মোবাইলে কোন কোন কার্যকলাপ গুলো করছেন।

Smartphone গুলো বর্তমান সময়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Gaming, banking, financial transaction, live video conference, internet browsing এবং data sharing-এর মতো সংবেদনশীল কাজ গুলো এর দ্বারা করা হয়ে থাকে।

আর যার ফলে, মোবাইল ফোন গুলোতে আমাদের প্রচুর ব্যক্তিগত এবং সংবেদনশীল তথ্য গুলো স্টোর বা জমা হয়ে থাকে।

তাই, আপনি যদি নিজের মোবাইলে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছেন, তাহলে হ্যাকিং থেকে আপনার স্মার্টফোনকে রক্ষা করতেই হবে।

আর এই আর্টিকেলের দ্বারা আপনারা ৯ টি এমন টিপস গুলো জানতে পারবেন যার দ্বারা নিজের মোবাইলকে হ্যাক-প্রুফ করা সম্ভব।
আমাদের আজকের এই উপায় গুলো অনুসরণ করে আপনি নিজের মোবাইলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ডেটা গুলোকে সম্পূর্ণ নিরাপদ করে রাখতে সক্ষম হবেন।

১. একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড

হ্যা হ্যা, আপনি হয়তো ভাবছেন এটা তো একটি অনেক সাধারণ কথা এবং পাসওয়ার্ড তো আমরা প্রত্যেকেই ব্যবহার করি।

তবে, আমি এখানে বিশেষ করে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার বিষয়টিতে আপনার ধ্যান কেন্দ্রিত করতে চাইছি।

আপনি যখন একটি অনেক সাধারণ (যেমন আপনার নাম বা জন্মের তারিখ) পাসওয়ার্ড সেট করবেন, সেটা হ্যাকাররা সহজেই crack করার সম্ভাবনা থাকছে।

তাই, নিজের মোবাইলে এমন একটি password বা PIN সেট করুন যেটার অনুমান করা কঠিন।

আপনার মোবাইলের security password গুলো যত অধিক শক্তিশালী থাকবে আপনার মোবাইল ততটাই অধিক নিরাপদ হবে।

২. সফটওয়্যার আপডেট

নিয়মিত ভাবে নিজের মোবাইলের সিস্টেম সফটওয়্যারটি আপডেট করার বিষয়টিতে নজর দিতে হবে।

নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট আপনার মোবাইলে নিরাপত্তা নিয়ে থাকা দুর্বলতা গুলোকে দূর করতে সাহায্য করে।

নিজের ফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মোবাইলর operating system এবং apps গুলো আপডেটেড রাখাটা জরুরি।

তাই, যখনি আপনার মোবাইলে কোনো ধরনের software updates-এর notification চলে আসবে, সেটাকে সাথে সাথে install করুন।

অবশই, অনেক সময় system software গুলো update হতে কিছুটা সময় অবশই নিয়ে থাকে,

তবে, যা আমি আগেই বলেছি এই আপডেট গুলোর দ্বারা আপনি নিজের মোবাইল নিরাপত্তা নিয়ে থাকা দুর্বলতা গুলো দূর করতে পারবেন।

এতে, হ্যাকাররা সহজে আপনার মোবাইল হ্যাক করতে পারবেননা।

৩. Public Wi-Fi:

কোনো পাসওয়ার্ড ছাড়া ওপেন WIFI connection উপলব্ধ থাকলেই, আমরা সরাসরি সেই নেটওয়ার্ক এর সাথে নিজের মোবাইল সংযুক্ত করতে একবারও ভাবিনা।

তবে আপনি কি জানেন, হ্যাকারদের জন্যে এই ধরণের Public Wi-Fi networks গুলো মোবাইল ও ল্যাপটপ হ্যাকিং এর জন্য একটি সেরা মাধ্যম।

তাই, আমি পরামর্শ দিবো, যেকোনো অচেনা অজানা জায়গাতে থাকা Public Wi-Fi networks গুলো ব্যবহার করবেননা।

আর যদি কোনো কারণবশত ব্যবহার করতে হয়, তাহলে ভুলেও সংবেদনশীল কার্যকলাপ গুলো, যেমন অনলাইন ব্যাঙ্কিং বা অনলাইনে কেনাকাটা করবেননা।

Open public Wi-Fi networks গুলো ব্যবহারের আরেকটি ঝুঁকি (risk) হলো, “আপনি অনলাইনে করার প্রত্যেক ক্রিয়াকলাপ গুলো হ্যাকার রা দেখতে পাবেন”.

তাই, Open public Wi-Fi ব্যবহার করতে হলেও CyberGhost বা TunnelBear এর মতো VPN পরিষেবা গুলো অবশই ব্যবহার করুন,

এতে আপনার online activities গুলো hackers-রা দেখতে ও ট্র্যাক করতে পারবেননা।

৪. মোবাইল এন্টিভাইরাস অ্যাপ

একটি ভালো ও কার্যকর mobile antivirus software-এর দ্বারা আপনি নিজের মোবাইলকে ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার ও সম্ভাব্য সাইবার হামলা গুলোর থেকে রক্ষা করতে পারবেন।

মোবাইল এন্টিভাইরাস গুলো আপনার মোবাইলে real-time scanning-এর মাধ্যমে ভাইরাস ও সাইবার আক্রমণ গুলো সনাক্ত করার কাজ করে থাকে।

তাই, হ্যাকার দের দ্বারা করা বেশিরভাগ সাইবার হামলা গুলোর থেকে নিজের মোবাইলকে নিরাপদ রাখার জন্যে এই এন্টিভাইরাস গুলো অবশই ব্যবহার করুন।

Google Play Store-এর মধ্যে গিয়ে আপনারা ভালো ভালো ও জনপ্রিয় mobile antivirus apps গুলো মোবাইলে ফ্রীতে download করে ব্যবহার করতে পারবেন।

৫. আপনি কি ইন্সটল করছেন

যখন আমরা আমাদের মোবাইলে বিভিন্ন apps গুলোকে install করে থাকি তখন আমাদের থেকে বিভিন্ন অনুমতি (permissions) গুলো চাওয়া হয়,

এই অনুমতি গুলোর মধ্যে মূলত camera permission, file read করা, microphone access ইত্যাদি।

একবার আপনি “approve”, “accept” বা “grant permission” এর মতো অপসন গুলো ক্লিক করে অনুমতি দিয়ে দেওয়ার পর,

অ্যাপ গুলো এখন আপনার মোবাইলে থাকা file গুলো সরাসরি দেখতে ও এক্সেস করতে পারবে, ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন এক্সেস করতে পারবে।

একবার ভেবেই দেখুন, অচেনা অজানা অ্যাপ গুলো মোবাইল থেকে এবার কতটা সহজে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো কপি করে নিতে পারছে।

তাই, মোবাইলে একটি নতুন অ্যাপ ইনস্টল করার সময় যখন সেই অ্যাপটি আপনার থেকে file, camera ও microphone একসেস ও ব্যবহার করার অনুমতি চাইবে,

তখন কিন্তু আপনাকে অনেক চিন্তা করে সেই অনুমতি দেওয়া দরকার।

৬. অ্যাপ লক করুন
WhatsApp, Facebook, Google photos, File manager, banking app ইত্যাদি এই ধরণের app গুলো অবশই lock করে রাখুন।

কি হবে যদি মোবাইল ব্যবহার করতে থাকা অবস্থায় কেও আপনার মোবাইল টেনে নিয়ে পালালো ?

আপনার মোবাইল তো সেই সময় খোলা থেকেই যাচ্ছে যার ফলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ফাইল, ছবি ইত্যাদি তারা দেখতে ও কপি করতে পারবেন।

তাই, অবশই মনে রাখবেন এমন ব্যক্তিগত ও জরুরি অ্যাপ গুলো লক করে রাখতে।

মোবাইলে থাকা individual apps lock করার ক্ষেত্রে আপনারা Google Play Store-এ AVG AntiVirus-এর মতো প্রচুর সফটওয়্যার পেয়ে যাবেন।

৭. সন্দেহজনক ইমেল এবং লিঙ্ক
বর্তমান সময়ে হ্যাকার দের মোবাইল হ্যাক করার আরেকটি অধিক ব্যবহৃত উপায় রয়েছে, সেটা হলো “ইমেইল এর দ্বারা”.

এই ধরণের উপায় গুলোকে বলা হয় “Phishing scams”.

এখানে, আপনার ইমেইল আইডিতে ইমেইল পাঠিয়ে ম্যালওয়্যার ডাউনলোড করা বা সংবেদনশীল তথ্য গুলো চুরি করার চেষ্টা করেন হ্যাকাররা।

তাই, যদি আপনারা মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় খুঁজছেন তাহলে এই বিষয়ে আগেই নজর দিতে হবে।

আপনার মোবাইলে সরাসরি চলে আসা সন্দেহজনক ইমেইল গুলো কখনো ওপেন করবেননা।

কেননা, এই ধরণের সন্দেহজনক ইমেইল গুলোর মধ্যে এমন কিছু লিংক (link) থাকতে পারে যেগুলো ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার মোবাইল হ্যাক হতে পারে।

অনেক সময়, link গুলোতে click করার পর ব্যক্তিগত তথ্য গুলো চুরি হওয়ার ভয় থেকে থাকে।

৮. Root এবং jailbreak
আজকাল প্রায় প্রত্যেকেই নিজের মোবাইল ফোন রুট করতে ইচ্ছুক।

মোবাইল রুট করার সুবিধা অবশই আছে, এটা আমিও মানছি, তবে মোবাইল রুট করার মাধ্যমে আপনি হ্যাকার দের সুবিধা করে দিচ্ছেন।

Rooting এবং jailbreaking-এর ফলে আপনার মোবাইলের ওয়ারেন্টি বাতিল অবশই হয়ে যাবে।

এছাড়া, একটি root হওয়া মোবাইল হ্যাকাররা তুলনামূলক ভাবে অধিক সহজে হ্যাক করতে পারেন।

তাই, নিজের android mobile রুট করবেননা যদি আপনি নিজের স্মার্টফোনকে হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করতে চান।

৯. Bluetooth

মোবাইল হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচার জন্যে আপনাকে নিজের মোবাইলের bluetooth-এর ওপরে অবশই নজর দিতে হবে।

তবে, ব্লুটুথ এর দ্বারা একটি মোবাইল হ্যাক করাটা তেমন সুবিধাজনক না হলেও হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অবশই থাকছে।

তাই, ধ্যান রাখতে হবে যাতে আপনার মোবাইলের ব্লুটুথ off থাকে।

অবশই, যখন আপনার দরকার হবে আপনি ব্লুটুথ চালু করে ব্যবহার করতে পারবেন, তবে ব্যবহার করা হয়ে গেলে সাথে সাথে অফ করতে হবে।

এটা করেও আপনি হ্যাকারদের আপনার ফোন অ্যাক্সেস করতে বাধা দিতে পারবেন।

তাহলে বন্ধুরা, আশা করছি নিজের মোবাইল হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচার উপায় গুলো বা হ্যাকার দের থেকে মোবাইল রক্ষা করার এই উপায় গুলো আপনাদের কাজে অবশই লাগবে।

আমাদের আজকের আর্টিকেলের সাথে জড়িত প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *